স্টাফ রিপোর্টার : এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সঠিক ভোটার তালিকা প্রণয়নে ‘বাড়ি বাড়ি যাওয়া নয়, আপগ্রেড’ চায় বিএনপি। সোমবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের নির্বাচন সংস্কার বিষয়ক কমিটির আহ্বায়ক ও স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান একথা বলেন।
মঈন খান বলেন, আসলে সত্যিকার অর্থে অনেস্টলি সঠিক ভোটার তালিকা আমরা করতে চাই, তাহলে কিন্তু আমরা বাড়ি বাড়ি যাওয়া নয়, আমরা কম্পিউটার এআই, আজকে কিন্তু আমরা কম্পিউটারকে বলে দিলে সে নিজেই করে দিতে পারে- সেটা এ্যাবসুলেটলি একুয়রেট হবে।
কোনদিন কার বয়স ১৮ বছর হয়ে যাবে সেটাও কিন্তু কম্পিউটার করে দিতে পারে। সেটার জন্য বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার প্রয়োজন নেই। বাড়ি বাড়ি যাওয়া এটা অত্যন্ত সময় সাপেক্ষ এবং অপ্রয়োজনীয় এবং এটাতে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। যিনি মারা গেছেন, তার নামটা অটোমেটিক্যালি বাদ চলে যাবে। এই বিষয় (ভোটার তালিকা) আমরা সংস্কার প্রস্তাবে স্পষ্ট করে বলেছি এটা আপগ্রেড হবে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিগত সরকারের আমলে আরপিও‘র সংশোধনে যে সম্পূরক আদেশ এনেছিলো তা বাতিল, নির্বাচনী পরিচালনায় কিছু বিধিমালা সংশোধন, রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের জন্য আচরণবিধিমালা ও রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের নীতিমালা সংশোধন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা আপগ্রেড করা, নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধি, গণমাধ্যমের নির্বাচনী আচরণ বিধিমালাসহ ১০ দফা সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরেন। এই সংস্কার প্রস্তাবসমূহ তারা সরকারের গঠিত নির্বাচন সংস্কার কমিশনের কাছে দিয়েছে।
ড. মঈন বলেন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি জন্য যাতে সত্যিকারভাবে মানুষ নিজের ভোট নিজে দিতে পারে এবং জনগণের সত্যিকার প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে পারে, ডামি প্রতিনিধি না, ভুয়া প্রতিনিধি না সেজন্য আমাদের এই সংস্কার প্রস্তাব। প্রশাসনের মাধ্যমে নির্বাচনকে কুক্ষিগত করতে বিগত সরকার অনেক কিছু করেছে। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি তারা যাতে রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করতে পারে, তারা নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে সেজন্য আমরা ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রনীত বিধিমালার সংশোধন চেয়েছি।
স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা যেসব প্রস্তাব করেছি, এগুলো প্রস্তাব অনুযায়ী নির্বাচন প্রক্রিয়া দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। এখানে এমন কোনো প্রস্তাব করা হয় নাই যেটা নতুন করে কোনো কিছু করতে হবে। আমরা নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী করার কথা বলেছি, নির্বাচনের সচিবালয় করা এবং তাদের কিছু ক্ষমতা দেয়া ইত্যাদি, আমরা প্রচলিত আইনগুলোর সংশোধন, সংস্কার, এগুলোর জন্য অধিক সময়ের প্রয়োজন হয় না।
স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা যেসব সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি দলের পক্ষ থেকে সুচিন্তিতভাবে, এক্সপার্ট কমিটির সঙ্গে বসেছি, অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা যেসব সংস্কারের কথা বলেছি, সেগুলো অধিকাংশ আইনি সংস্কারের বিষয়, কাগজের বিষয়, প্রাকটিক্যালি যে কাজগুলোর জন্য নির্বাচন কমিশন সময় নেয় যেমন ভোটার তালিকা প্রণয়ন, নতুন ভোটার সংযোজন, কি কি ভুল-ভ্রান্তি আছে, ভুয়া ভোটার স্ক্রটনি করা তারপরে নির্বাচন কাজ অফিসার নিয়োগ, ডিলিমিটেশন ইত্যাদি সব কাজ গুছাতে প্রাকটিক্যালি ২/৩ মাসের বেশি সময় লাগার কথা না। সরকারের আরো সংস্কার প্রশাসনিক সংস্কার, জুডিশিয়াল সংস্কার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সংস্কার আছে এগুলো সব সম্পন্ন করে নির্বাচন উপহার দিতে আমাদের মনে হয় না খুব বেশি হলে ৩/৪ মাসের বেশি সময় লাগবে। সব রিকমন্ডেশন ফাইনাল হওয়ার পরে আপনারা ধারণা পাবেন প্রাকটিক্যালি আমাদের কয়দিন সময় লাগবে একটা ইনক্লুসিভ ইলেকশন অনুষ্ঠানের জন্য। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন : সিরিয়ায় নতুন যুগের সূচনায় হামাসের অভিনন্দন