নিজের মেয়ের জন্য সব করবেন, স্ত্রীর জন্য কিছুই না। এটা ইসলাম বলেনা।

ওকে নিউজ স্পেশাল ধর্ম নারী পুরুষ প্রচ্ছদ মুক্তমত লাইফ স্টাইল শিক্ষা হ্যালোআড্ডা

রাশিদা ওবাইদ নিতু: বাঙালি মেক্সিমাম পুরুষদের স্ত্রীকে আলাদা হাত খরচ দেয়ার অভ্যাস নেই। কারণ অনেক ছেলেই তার বাবাকে দেখেনি মাকে আলাদা খরচ দিতে, বাবাকে দেখেনি মায়ের জন্য পছন্দের কিছু কিনে নিয়ে আসতে(ব্যতিক্রম আছে তবে হাতেগোনা)। অনেক স্বামীরা স্ত্রীকে বলে তোমার প্রয়োজন হলে আমাকে বলবে। অথচ বেশীরভাগ মেয়েই লজ্জা ও সংকোচে স্বামীকে অনেক কিছুই বলে না। অনেক মেয়েরা নিজের প্রয়োজন নিজের বাবা ও ভাইয়ের কাছেই বলেনা। সেখানে বিয়ের পর হাজবেন্ডকে কিভাবে বলবে??
.
তাছাড়া স্ত্রীর ইচ্ছে হতে পারে দান সাদকা করতে, প্রিয়জনদের ছোটখাটো গিফট দিতে, পছন্দের বই কিনতে। ভাবে মেয়ে বাসায় আছে টাকা লাগবে না, অথচ একটা মেয়ের কি আসলেই কিছুর প্রয়োজন হয় না??
.
ছেলে বাড়িতে থাকলেও হাত খরচ পাবে,মেয়ে মানুষের কিসের খরচ??মেয়েরা বাড়িতে থাকে তাই তাদের টাকার প্রয়োজন নেই এটা একটা অযৌক্তিক কথা।প্রয়োজনে ভিক্ষুককেও টাকা দেয়ার টাকাও অনেক মেয়েদের থাকেনা।
.
কয়জন বাবা, ভাই,স্বামী তার মেয়ে,বোনকে, স্ত্রীকে হাতখরচের টাকা দিচ্ছে??হাত খরচ দেয়ার কথা অনেক পুরুষদের মাথায় ই থাকেনা।বাসায় খাচ্ছে পরছে আবার টাকা লাগবে কেন??
.
পরিবার থেকেই আগলে রাখুন নারীদের। আপনি নিজের মেয়ের জন্য সব করবেন, স্ত্রীর জন্য কিছুই না। এটা কখনোই ইসলাম বলেনা।
..
জননীর কদর নেই। জননীর বাচ্চার কদর!!!!ইসলাম নারীর যে অধিকার দিয়েছে একজন পুরুষ হিসেবে নিজের ঘরেই সে অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন।
.
নিজের ঘরের মেয়েদের কে সামান্য করে হলেও হাত খরচের অভ্যাস গড়ে তুলেন ভাইয়েরা।কারণ মেয়েদের এমন অনেক খরচ আছে যা মেয়েরা বাবা,স্বামী,ভাই থেকে চাইতে লজ্জাবোধ করে।
.
বাবা ও ভাই থেকে অনেক মেয়েরা টাকা চেয়ে নিতে পারে।কিন্তু স্বামীর কাছে অনেক মেয়েরাই টাকা চাইতে পারেনা।বউদের দোষ বেশী থাকে।কিছু টাকা খরচ করলেও দিন শেষে হিসাব হয় এই টাকা কোথায় খরচ হল?বউ অনেক খরুচে!!মেয়েরা যেহেতু লাজুক তাই মাসে একটা ফিক্সড এমাউন্ট বউকে দিয়ে বলুন এই টাকা তোমার ইচ্ছেমতো খরচ করো।

আপনি আপনার স্ত্রীকে তার ন্যায্য প্রয়োজনে টাকা দেওয়ার পর কখনো খোঁটা দিতে পারবেন না। এই অধিকার আপনার নেই।
বরং তার ভরণ-পোষণ সহ নিত্য প্রয়োজনাদি মেটানো আপনার নৈতিক দায়িত্ব এবং ধর্মীয় কর্তব্য। বাড়িওয়ালার ভাড়া চুকানোর সময় আমরা কখনো এমনটা ভাবি না যে, এটা তার প্রতি আমার অনুগ্রহ। দোকানীকে বিল দেয়ার সময় আমরা কখনো মনে করি না যে, তার প্রতি দয়া করছি। বরং কেউ যদি কখনো এদের সাথে অনুগ্রহ সূলভ আচরণ করে, তার কপালে চড় থাপ্পড়ও জুটতে পারে।

কখনো স্ত্রীকে বলবেন না, ‘সারাদিন এতো টাকা টাকা করো কেন? টাকা দিয়ে কী করো? কামাই করো না তো, তাই বুঝো না কত কষ্টে এই টাকা কামাই।’

এমন অনেক মানুষকে চিনি, যারা ঈদ উপলক্ষে পরিবারের জন্য আয়োজন করে শপিং করে। নানারকম ঈদসামগ্রী কিনে দেয়। অথচ স্ত্রীর সরলতার সুযোগ নিয়ে তাকে পুরোপুরি বঞ্চিত করে।সবারটা হলেও বউয়ের জন্য কিনার সময় কেনো জানি টাকার কম পরে যায়।স্বামীকে খুশী করতে বউ সেটাও মেনে নেন।আচ্ছা এমন কখনও হয়েছে যে আপনার পকেটে টাকা কম মায়ের জন্য কিনবেন নাকি বউয়ের জন্য?আপনি মায়ের জন্যই কিনে বাড়ি ফিরবেন।মা না পেয়ে বউ পেলে বউ খারাপ কিন্তু বউ এর ভাগ মা পেলে বউ অনেক ভালো।এমনও হতে পারে, আপনার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের দেয়ার মতো অনেকেই আছে। আপনার অন্য ভাইবোনেরা আছে।বাবা আছেন।কিন্তু আপনার স্ত্রী? তাকে দেয়ার মতো কে আছে আপনি ছাড়া?আপনিই তাকে তার পরিবার থেকে নিয়ে এসেছেন একমাত্র অভিভাবকের দাবি করে।এখন অভিভাবক হিসাবে কি দায়িত্ব আপনি পালন করলেন তার জবাব সৃষ্টিকর্তাকে কি দিবেন?বাবা ভাই যখন অভিভাবক ছিলেন তখন আরাম আয়েশে নানান আবদারে জীবন কাটানো মেয়েটিও আপনার কাছে এসে হাসিমুখে বলে “কিছু লাগবে না।” তার এই কথার পিছনের প্রয়োজন আপনি না বুঝলেও তার বাবা ভাই কিন্তু বুঝতেন।

একটা কোর্সের রেজিস্ট্রেশনের কাজ সামাল দিতে গিয়ে দেখলাম, বহু বোন তাদের ফ্যামিলির কাছ থেকে নূন্যতম হাত খরচটাও পান না। ইসলামি শারিয়াহর প্রতি পূর্ণাঙ্গ শ্রদ্ধা জানিয়ে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তারা বাহিরে জব করেন না হয়তো। কিন্তু বাবা, ভাই কিংবা স্বামীর পক্ষ থেকে তাদের ন্যায্য খরচটুকুও পাওয়া হয় না। আআল্লাহর হুকুম মেনে ঘরের বাহিরে তারা উপার্জন করেন না কিন্তু তাদের মধ্যেও একটা লজ্জাবোধ থাকে যে তারা হয়তো পরিবারের পুরুষটার বোঝা। তাই তারা টাকা চাইতে লজ্জাবোধ করেন। অন্যের হক বুঝিয়ে না দিয়ে আপনি মাহফিলে মাহফিলে দৌড়াচ্ছেন? মাসের পর মাস তাবলীগে সময় দিচ্ছেন? এই ইসলাম আপনি পেলেন? কেউ কেউ টাকা জমাইতে জমাইতে কবরে চলে যাবে তাও বউকে হাত খরচ দিবে না।

আরো পড়ুন : সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও মহান বিজয় দিবস উদযাপন করবে এসএসপি

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *