মোশতাককে শ্রদ্ধা জানিয়ে বিপাকে অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহ

প্রচ্ছদ রাজনীতি শিক্ষা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসে আলোচনা সভায় ‘মুখ ফসকে’ খন্দকার মোশতাককে শ্রদ্ধা জানিয়ে বিপাকে পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহ। রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) মিলনায়তনে দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তৃতায় তিনি ভুলবশত শ্রদ্ধা জানান বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বিষয়টির প্রতিবাদ করলে অধ্যাপক রহমত উল্লাহ বক্তব্যের সেই অংশটি প্রত্যাহার করে নেন।

এ বিষয়ে অধ্যাপক রহমত উল্লাহ বলেন, মুজিবনগর সরকারে কে কোন মন্ত্রণালয় বা বিভাগে ছিলেন, তা নিয়ে আমি আলোচনা করেছি। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা, ১০ এপ্রিলে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রসহ সার্বিক বিষয়ে আমি আলোচনা করি। মুজিবনগর সরকার সম্পর্কে বলতে গিয়ে যদি ‘স্লিপ অব টাং’ কিছু বলে থাকি, তাহলে আমি দুঃখিত।

তিনি বলেন, ইতিহাস তো আমি তৈরি করিনি। মোশতাক বাংলাদেশের ইতিহাসে একজন ঘৃণিত ব্যক্তি। এই জাতির ভাগ্যের জন্য কলঙ্ক। তার প্রতি সম্মান জানানোর প্রশ্নই আসে না। আমি আমার বক্তব্যে তার প্রতি নিন্দা জানিয়েছি। ইতিহাসের ঘৃণিত ব্যক্তিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ইতিহাসকে বিকৃত করার অভিলাষ বা দুঃসাহস আমার নেই।

অধ্যাপক রহমত উল্লাহর বক্তব্যের বিষয়ে অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ বলেন, মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভায় মুজিবনগর সরকারের সব মন্ত্রীকে তাদের অবদানের জন্য শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে অধ্যাপক রহমত উল্লাহ খন্দকার মোশতাকের নাম উল্লেখ করেও শ্রদ্ধা জানান। এরপর আমি আমার বক্তব্যে বলেছি, মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময় মোশতাক মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল এবং তাকে চোখে-চোখে রাখতে হয়েছে। তিনি পাকিস্তানের সঙ্গে কনফেডারেশন করার প্রস্তাবেও যুক্ত ছিলেন। কাজেই শিক্ষক সমিতির সভাপতি যে বক্তব্য রেখেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা গ্রহণ করতে পারবে না।

এ বিষয়ে উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, অধ্যাপক রহমত উল্লাহর বক্তব্যে খন্দকার মোশতাক আহমদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর অংশটুকু প্রত্যাহার করা হয়েছে। (মোশতাকের নাম) এককভাবে নয়, আরও কয়েকটা নামের সঙ্গে বোধ হয় তিনি উচ্চারণ করেছিলেন। সভায় একজন আলোচক নিজের বক্তব্যে বিষয়টি নজরে আনেন। পরে অধ্যাপক রহমত উল্লাহর বক্তব্যের ওই অংশটুকু প্রত্যাহার করা হয়।

উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে সভায় সহ-উপাচার্য মুহাম্মদ সামাদ ও শিক্ষকনেতা মো. রহমত উল্লাহ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন আহমেদসহ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন ও কর্মচারী সমিতির নেতারা বক্তব্য দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার সভা সঞ্চালনা করেন।

আরো পড়ুন : ইউক্রেনের মারিওপোল দখলে নিল রাশিয়া

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *