নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে করোনা সংক্রমণ ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। দৈনিক রোগী শনাক্তের সংখ্যার পাশাপাশি পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হারও বাড়ছে। আজ সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৮৭৩ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এ সময় করোনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে করোনায় মৃত্যু হয়েছিল গত ৩০ মে।
আজ বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৮ হাজার ২৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ১০ দশমিক ৮৭। আগের দিন এই হার ছিল ৭ দশমিক ৩৮।
এর আগে দেশে করোনা শনাক্তের হার ১০-এর ওপরে ছিল গত ১৭ ফেব্রুয়ারি, ১০ দশমিক ২৪। এরপর শনাক্তের হার ধারাবাহিকভাবে কমে ছিল।
বাংলাদেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশে করোনা সংক্রমণের চিত্রে কয়েক দফা ওঠানামা করতে দেখা গেছে। করোনা পরিস্থিতি প্রায় সাড়ে তিন মাস নিয়ন্ত্রণে থাকার পর গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। করোনার নতুন ধরন অমিক্রনের প্রভাবে দ্রুত বাড়তে থাকে রোগী শনাক্ত ও শনাক্তের হার।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে নিয়মিতভাবে রোগী শনাক্ত ও শনাক্তের হার কমেছে। দেশে সংক্রমণ কমে আসায় আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। তুলে নেওয়া হয় করোনাকালীন বিধিনিষেধ। গত ২৫ মার্চ থেকে ১২ জুন পর্যন্ত দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১০০-এর নিচেই ছিল। এরপর এই কয়েক দিনে ২৪ ঘণ্টায় রোগী শনাক্তের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে ৮০০ ছাড়িয়ে গেল।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় যে ৮৭৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ৮১০ জন ঢাকা বিভাগের। এর মধ্যে ৭৯৮ জনই মহানগরসহ ঢাকা জেলার। এর বাইরে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে চট্টগ্রামে ৩১ জন এবং কক্সবাজারে ১৪ জন। অন্যান্য জেলায় রোগী শনাক্তের সংখ্যা এখনো এক অঙ্কের ঘরে রয়েছে।
সংক্রমণের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত দেশে ১৯ লাখ ৫৭ হাজার ২০০ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৫ হাজার ৮৯৯ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ১৩২ জনের।
দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সব ক্ষেত্রে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা, ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ নীতি প্রয়োগসহ ছয় দফা ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সরকারের করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। গত মঙ্গলবার রাতে ভার্চ্যুয়ালি এক সভায় কমিটি এসব পরামর্শ দেয়।
পরামর্শের মধ্যে আরও রয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য জনসাধারণকে আবারও উদ্বুদ্ধ করার জন্য সব গণমাধ্যমকে অনুরোধ জানানো, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা ও জনসমাগম বর্জন করতে হবে। ধর্মীয় প্রার্থনার স্থানে (যেমন মসজিদ, মন্দির, গির্জা ইত্যাদি) সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।