নিজস্ব প্রতিবেদক: পানিপ্রবাহের দিক থেকে অ্যামাজনের পরই পদ্মা নদীর অবস্থান। সেই পদ্মাতেই নির্মাণ করা হয়েছে দেশের দীর্ঘতম সেতু। তবে আজ দেশের হিসেবে নয়, কথা বলব বিশ্বরেকর্ড নিয়ে। পদ্মা সেতু নির্মাণে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে, যা বিশ্বে প্রথম।
অন্য কোনো সেতুর ক্ষেত্রেই এমনটা ঘটেনি।
পদ্মা সেতুর বিয়ারিংয়ের ক্ষমতায় হয়েছে বিশ্বরেকর্ড। পিলার ও সেতুর নিচের অংশের পাটাতনের মাঝে রয়েছে ১০ হাজার টনের ‘ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিং’। এই বিয়ারিংয়ের ফলে রেকটার স্কেলের ৯ মাত্রার ভূমিকম্প সইতে পারবে পদ্মা সেতু। বিশ্বে এটাই প্রথম, এমন শক্তিশালী বিয়ারিং আর কোনো সেতুতেই ব্যবহার করা হয়নি।
পদ্মার মূল সেতুর নির্মাণে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। আর প্রকল্পে নদীশাসনে ব্যয় আট হাজার ৭০৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এমন বিপুল অঙ্কের অর্থ বিশ্বের আর কোনো সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে ব্যয় করা হয়নি। এটাও বিশ্বরেকর্ড। সেতু প্রকল্পে নদীশাসন হয়েছে দুই পারে ১৩.৮ কিলোমিটার। নদীশাসনে এক কোটি ৩৩ লাখ কংক্রিট ব্লক ব্যবহার করা হয়েছে। সাড়ে চার কোটি জিও ব্যাগভর্তি বালু ফেলা হয়েছে।
পদ্মায় সেতু নির্মাণে মোট ৪২টি খুঁটি ব্যবহার করা হয়েছে। এমন খুঁটি নির্মাণে ৯৮ থেকে ১২২ মিটার গভীর পাইলিং করা হয়েছে। যা পৃথিবীর অন্য আর কোনো সেতুর ক্ষেত্রে করা হয়নি। পদ্মা সেতুর পাইলগুলো তিন মিটার ব্যাসার্ধের। অন্য কোনো সেতুর পাইলের ব্যাসার্ধও এত নয়।
পদ্মা সেতু ছাড়া বিশ্বের অন্য আর কোনো সেতুতে এত গভীরে স্টিল পাইপ বসানো হয়নি। সেতুর প্রতিটি পাইল ৫০ মিলিমিটার পুরু স্টিলের পাইপে মোড়া। সেতুর ৪২টি খুঁটির মধ্যে নদীতে যে ৪০টি খুঁটি রয়েছে তার প্রতিটির জন্য ছয়টি করে পাইল করার কথা ছিল। কিন্তু ১০০ মিটার গভীরেও পাথরের স্তর না পাওয়ায় ১৪টি খুঁটিতে সাতটি করে পাইল বসানো হয়েছে।
আরো পড়ুন : পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আকর্ষণ ছিল বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ‘স্মোক পাস ডিসপ্লে’