আত্মহত্যার মামলায় হেনোলাক্স গ্রুপের মালিক ও তার স্ত্রী গ্রেফতার

আইন-আদালত ক্রাইম নিউজ জনদুর্ভোগ দুর্নীতি প্রচ্ছদ শিল্প প্রতিষ্ঠান

জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নিজের শরীরে আগুন দেওয়া ব্যবসায়ী গাজী আনিসের আত্মহত্যার মামলায় হেনোলাক্স গ্রুপের কর্ণধার নুরুল আমিন তার স্ত্রী ফাতেমা আমিনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। মঙ্গলবার (৫ জুলাই) রাতে রাজধানীর উত্তরা এলাকা তাদের গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, উত্তরায় এক আত্মীয়র বাসায় তারা আত্মগোপন করেছিলেন। ওই বাসা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে মঙ্গলবার সকালে নিজের শরীরে আগুন দেওয়া কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও ঠিকাদার গাজী আনিস মারা যান। এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে আনিসের বড় ভাই নজরুল ইসলাম আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে শাহবাগ থানায় হেনোলাক্স গ্রুপের কর্ণধার নুরুল আমিন ও তার স্ত্রী ফাতেমা আমিনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার বিকালে প্রেসক্লাবের ফটকের ভেতরে খোলা স্থানে আনিস নিজের গায়ে আগুন দেন। শোয়া অবস্থায় তার গায়ে আগুন জ্বলছে দেখে আশপাশ থেকে সবাই ছুটে যান। তারা পানি ঢেলে আগুন নেভান। তবে ততক্ষণে তার গায়ের পোশাক সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। পরে তাকে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার ভোর ৬টা ১০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।

মামলায় নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, ২০১৬ সালে হেনোলাক্সের কর্ণধার ডা. নুরুল আমিন এবং তার স্ত্রী ফাতেমা আমিনের সঙ্গে পরিচয় থেকে ঘনিষ্ঠতা হয় তার ভাই ‘আনিসুরের’। তারা একসঙ্গে বিদেশ ভ্রমণও করেন। তাদের মধ্যে ‘খুবই সখ্য’ গড়ে উঠে। ২০১৮ সালে তারা (নুরুল দম্পতি) হেনোলাক্স কোম্পানিতে ‘লভ্যাংশ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে’ বিনিয়োগ করার জন্য আনিসুর রহমানকে অনুরোধ করেন। তাদের অনুরোধে বিশ্বাসের ভিত্তিতে প্রথমে এক কোটি এবং পরে তার বন্ধুর কাছ থেকে আরও ২৬ লাখ টাকা নিয়ে আনিসুর হেনোলাক্সে বিনিয়োগ করেন। এ বিনিয়োগের প্রাথমিক চুক্তি সম্পাদন করা হলেও হেনোলাক্সের পক্ষ থেকে ওই দুইজন চূড়ান্ত চুক্তি সম্পাদন করতে ‘গড়িমসি করেন’ অভিযোগ করে এজাহারে বলা হয়, এরই মধ্যে কিছুদিন আমার ভাইকে লভ্যাংশ দিলেও পরে তা বন্ধ করে দেয়।

এ বিষয়ে আনিস কথা বলতে গেলে নুরুল আমিন বিভিন্ন লোক দিয়ে ‘নানাভাবে হেনস্তা এবং ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করেন’বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়। লভ্যাংশসহ এখন পর্যন্ত তিন কোটি টাকা পাওনা রয়েছে দাবি করে এজাহারে বলা হয়, ওই টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করেও না পেয়ে কুষ্টিয়ায় হেনোলাক্সের দুইজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন আনিসুর। এজাহারে নজরুল ইসলাম বলেছেন, গত ৪ জুলাই বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটের দিকে আনিসুর রহমান তাকে ফোন করে জানান, ওই দিন বিকালে পাওনা টাকার চেক হেনোলাক্সের কর্ণধার ডা. নুরুল আমিন এবং তার স্ত্রী ফাতেমা আমিন দেবেন বলে তাকে জানিয়েছেন। কিন্তু বিকালে তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো চেক দেননি। এর পরপরই প্রেসক্লাবে এসে আনিস গায়ে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন এবং পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে তার মৃত্যু হয় উল্লেখ করে এজাহারে বলা হয়, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চেক না দিয়ে এবং বিরূপ আচরণ করে আনিসুর রহমানকে আত্মহত্যা করতে ‘প্ররোচিত করা হয়েছে’।

আরো পড়ুন : ঈদুল আযহার ৮ দিনব্যাপি আয়োজনে চ্যানেল আইতে নতুন চলচ্চিত্র ৭টি, নাটক ১৫টি, টেলিফিল্ম ১৩টি

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *