রাত পোহালেই ভয়াল ১৫ই আগস্ট। বাংলার ইতিহাসের এক জঘন্যতম কালো অধ্যায়। আজ থেকে ৪৭ বছর পূর্বে এমন একটি দিনে রাতের আধারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে কিছু কতিপয় বিপথগামী সেনা সদস্য। যখন ছোট ছিলাম তখন এরকম অনুষ্ঠানের গুরুত্ব খুব একটা বুঝতামনা। মনে করতাম, শোক দিবসও একটি সাধারণ অনুষ্ঠান। কিন্তু আজ বুঝতে পারি ১৫ই আগস্টের এই শোকাবহ দিনটি, এক যন্ত্রণাময়ী অধ্যায়। এই দিনে আমরা হারিয়েছি এমন এক নেতাকে যার প্রশস্তবুক ও হৃদয় আগলে রেখেছিল বাঙালি জাতিকে। এ জাতির জন্য যার আত্মত্যাগ ছিল ৪৬৮২ দিনের কালকুঠুরির জীবন। যার প্রতিটি ক্ষণের চিন্তা ছিল বাঙালির প্রত্যেকটি অধিকারহরণকে কিভাবে করবেন পূরণ। বঙ্গবন্ধু এমনই এক অনন্য নেতা, যিনি মৃত্যু ভয়কে তুচ্ছ করে বলেছিলেন, “আমার মৃত্যু আসে যদি আমি হাসতে হাসতে যাবো। আমার বাঙালি জাতকে অপমান করে যাবোনা। তোমাদের কাছে ক্ষমা চাই বোনা এবং যাবার সময় বলে যাবো জয়বাংলা, স্বাধীনবাংলা, বাঙালি আমার জাতি, বাংলা আমার ভাষা, বাংলার মাটি আমার স্থান। বাংলা আমার স্বাধীন, বাংলাদেশ আজ স্বাধীন।”
নিজ গুণে, সক্ষমতায়, সাহস ও মেধার অসাধারণ দীপ্তিতে এবং আন্দোলন সংগ্রামের দীর্ঘ ও কষ্টকর পথ পেরিয়ে বঙ্গবন্ধু আবির্ভূত হন জাতির কণ্ঠস্বর হিসেবে। জনতার অভিপ্রায়, আকাঙ্খা ও স্বপ্নধারণ করে বাঙালি জাতিকে মুক্তির নতুন সংগ্রামের সন্ধান দেন। আর কেবল সেজন্যই দ্যা টাইমস অব লন্ডন ১৯৭৫ সালের ১৬ই আগস্ট পত্রিকায় উল্লেখ করে,
“সব কিছু সত্তে¡ও বঙ্গবন্ধুকে সবসময় স্মরণ করা হবে। কারণ, তাঁকে ছাড়া বাংলাদেশের বাস্তব কোনো অস্তিত্ব নেই।’’
পাকিস্তানের দীর্ঘ ২৩ বছরের শাসন, শোষণ ও বঞ্চনার ইতিহাসের সমাপ্তি ঘটাতে বঙ্গবন্ধুর অবদান আজও জ্বাজল্যমান। তাঁর নেতৃত্বে মাত্র নয় মাসের মধ্যে অর্জিত হয়েছে বাংলার প্রাণপ্রিয় স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুর এ অনন্য অবদান আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আজ বোঝা যায় ইউক্রেন, সিরিয়া প্রভৃতি দেশের যুদ্ধ পরিস্থিতি দেখে। আমি আজ নিজেকে খুবই সৌভাগ্যবান মনে করি কেননা জাতির পিতার দূরদৃষ্টি ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের গুণে জন্মগ্রহণ করেই একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। তাই আমার উপলব্ধিতে বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতির এক স্বপ্ন পুরুষ। যার জন্ম নাহলে হয়তো পেতামনা ৫৬হাজার বর্গমাইলের একটি স্বাধীন ভূখন্ড, একটি লালসবুজের পতাকা। তাই বাঙালির অস্তিত্বে বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ, আরো এগিয়ে যাবে। আর তার অংশীদার হিসেবে বর্তমান প্রজন্মের একজন হিসেবে আমিও আমার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব এমনটাই আশা করি। ১৫ই আগস্টের সকল শহীদ সহ এদেশের সকল বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রেখে বলি-
“যদি রাত পোহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরেনাই
তবে বিশ্ব পেত এক মহান নেতা, আমরা পেতাম ফিরে জাতির পিতা”
(নবম শ্রেণীরশিক্ষার্থী,
আলী আমজাদ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়)
আরো পড়ুন : বিরামপুরে পারস্পরিক শিখন কর্মসুচি প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত!