নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক মার্কিন নাগরিকের আইফোন পেয়ে তা ফেরত দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় রিকশাচালক আমিনুল ইসলামকে পুরস্কৃত করবেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। আজ বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেয়রের একান্ত সচিব ফরিদ উদ্দিন।
মেয়র আতিকুল ইসলামের সহকারী একান্ত সচিব বলেন, দেশের এই পরিস্থিতিতে একজন রিকশাচালক আমিনুল যে সততা দেখিয়েছেন, তা একটি দৃষ্টান্ত। আমিনুলের সততাকে সম্মান জানাতে ও এই ধরনের কাজে অন্যদের উৎসাহিত করতে আমিনুলকে পুরস্কৃত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম। শিগগিরই তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন মেয়র।
৫ আগস্ট রিকশায় যাত্রী বসার গদির ফাঁকে বন্ধ অবস্থায় রিকশাচালক আমিনুল ইসলাম একটি মুঠোফোন (আইফোন ১৩ প্রো ম্যাক্স) পান। ৯ আগস্ট পুলিশের মাধ্যমে মুঠোফোনটি তিনি মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেন।
এ বিষয়ে গতকাল বুধবার ‘মার্কিন নাগরিকের আইফোন পেয়ে ফিরিয়ে দিলেন রিকশাচালক’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
রিকশাচালক আমিনুল ইসলাম বলেন, ৮ বছর ধরে গুলশান এলাকায় রিকশা চালান তিনি। ৫ আগস্ট গুলশান-২ নম্বর এলাকায় যাত্রী নামিয়ে দেওয়ার পর তিনি গদির ফাঁকে (যাত্রী বসার স্থান) মুঠোফোনটি দেখতে পান। দেখে মনে হয়, মুঠোফোনটি বেশ দামি। মুঠোফোনটি বন্ধ অবস্থায় ছিল। চার্জ না থাকায় সেটি চালু করাও যাচ্ছিল না। ফলে মুঠোফোনটির মালিক কে, তা বুঝতে পারছিলেন না।
আমিনুল বলেন, মুঠোফোনটির মালিককে খুঁজে বের করতে তা চালু করার দরকার ছিল। তাই তিনি উত্তর বাড্ডার একটি দোকানে গিয়ে চার্জার কেনার চেষ্টা করেন। কিন্তু দোকানদার চার্জারের দাম অনেক বেশি চান। তাই তিনি চার্জার না কিনে ফিরে আসেন। পরে তিনি মুঠোফোনটির সিম খুলে ফেলেন। নিজের মুঠোফোনে সিমটি চালু করেন। সিম চালু করার পর এক নারীর ফোন আসে। তিনি মুঠোফোনটির মালিকানা দাবি করেন। তখন তিনি ওই নারীকে মুঠোফোনটি নিয়ে যেতে বলেন। পরে তিনি পুলিশের মাধ্যমে মালিকের কাছে মুঠোফোনটি ফিরিয়ে দেন।
গুলশান থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আবদুল কাদির বলেন, মার্কিন নাগরিক সীমা আহম্মেদ তাঁর ছেলেকে নিয়ে রিকশায় চড়ে একটি রেস্টুরেন্টে গিয়েছিলেন। সে সময় অসাবধানতাবশত মুঠোফোনটি পড়ে যায়। পরে তিনি গুলশান থানায় জিডি করেন। মুঠোফোনটিতে রোবট তৈরির একটি প্রকল্পের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত ছিল। আমিনুল মুঠোফোনটি পেয়ে সততার সঙ্গে ফেরত দিয়েছেন।
আরো পড়ুন : বাংলাদেশের ছবি ‘জেকে ১৯৭১’ পেল মুম্বাইয়ে সেরা ঐতিহাসিক সিনেমার পুরস্কার