নিজস্ব প্রতিবেদক: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে সারা দেশে এ পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ভোলায় দুজন, নড়াইলে একজন ও বরগুনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।
ভোলার দৌলতখান পৌরসভা এলাকায় গতকাল সোমবার রাত নয়টার দিকে গাছচাপায় এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। তাঁর নাম বিবি খাদিজা (৬৮)। জেলার চরফ্যাশন উপজেলার শশীভূষণ থানা এলাকায় সড়ক দিয়ে দুই মোটরসাইকেল আরোহী যাওয়ার সময় গাছ পড়ে ঘটনাস্থলে একজন মারা যান। অপরজনকে আহত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহত দুজনের নাম জানা যায়নি। এসব তথ্য প্রথম আলোকে মুঠোফোনে নিশ্চিত করেছেন ভোলার পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম।
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে গতকাল দুপুরে গাছের ডাল পড়ে মর্জিনা বেগম (৪০) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। তাঁর বাড়ি বাগেরহাট সদর উপজেলার অর্জনবাহার গ্রামে। তাঁর ১১ বছর বয়সী এক ছেলে রয়েছে। নিহত অপরজন হলেন বরগুনার সদর উপজেলার সোনাখালী এলাকার আমেনা খাতুন। রাত আটটার দিকে ঘরের ওপর গাছ পড়লে ভেতরে চাপা পড়ে তিনি মারা যান।
স্থানীয় লোকজনের বরাত দিয়ে লোহাগড়া থানা–পুলিশ জানায়, মর্জিনা তাঁর শিশুপুত্রকে নিয়ে লোহাগড়া পৌর এলাকার রাজপুর গ্রামের আবদুল গফ্ফারের বাড়িতে ভাড়া থেকে বিভিন্ন বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বর দিয়ে যাওয়ার সময় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের সামনে পৌঁছালে একটি মেহগনিগাছের ডাল ভেঙে তাঁর মাথায় পড়লে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
বরগুনার সোনাখালী এলাকার সমাজকর্মী এনামুল হক ওরফে শাহীন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে তাঁদের এলাকায় নিহত আমেনা খাতুনের বয়স ১০০ বছরের বেশি। ওই নারী রাত আটটার দিতে ঘরের ভেতর খাবার খাচ্ছিলেন। ঘূর্ণিঝড়ে পাশের একটি গাছ ঘরের ওপর পড়ে। এ সময় ঘরের ভেতর চাপা পড়ে তিনি মানা যান। এ তথ্য নিশ্চিত করে বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মঙ্গলবার সকালে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ওই নারীর পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে গতকাল রাতে দেওয়া সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং রাত ৯টার দিকে ভোলার কাছ দিয়ে বরিশাল–চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। পরবর্তী তিন–চার ঘণ্টার মধ্যে ঝড়টি উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর এখন উত্তাল।
আরো পড়ুন : ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে আগামীকাল তিন বিভাগের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ