নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ১০ ডিসেম্বর রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশ ঘিরে নাশকতার আশঙ্কায় সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক পাহারায় থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি গতকাল শুক্রবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের সম্মেলনে এ আহ্বান জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মীদের বলে দিচ্ছি, প্রতিটি ওয়ার্ড, মহল্লা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সতর্ক পাহারায় থাকবেন। সারা দেশে গ্রামে গ্রামে সতর্ক পাহারায় থাকবেন।
ছাত্রলীগের সম্মেলন ৮ তারিখ থেকে ৬ তারিখে আনা হলো তারা (বিএনপি) যাতে সোহরাওয়ার্দীতে সমাবেশ করতে পারে, কিন্তু তারা তা শুনবে না। ’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘খেলা হবে সন্ত্রাস, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ ও লুটপাটের বিরুদ্ধে। আমরা মারামারি-পাল্টাপাল্টি করব না। তবে কেউ আক্রমণ করলে আক্রমণ হবে কি না তা সময় বলে দেবে। গত পরশু মতিঝিলে বিআরটিসির একটি বাস পুড়িয়ে দিয়েছে। আগুন সন্ত্রাস শুরু হয়ে গেছে। আমাদের কর্মীরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ললিপপ খাবে, এটি মনে করবেন না। ’
বিএনপির সমাবেশের স্থান প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জিয়াউর রহমান একটি লেখা লিখেছিলেন, ৭ই মার্চের ভাষণেই স্বাধীনতার ঘোষণা পেয়ে গিয়েছিল মানুষ। এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চের ভাষণ দিয়েছিলেন। সেই জায়গা তাদের পছন্দ না। তারা অনড়, অনুমতি না দিলেও অনড় থাকবে। আইন মানবে না। বলেছি পরিবহন চলবে, তার পরও কাঁথা, বালিশ, কম্বল, মশার কয়েল সব নিয়ে পল্টন এলাকায় তাঁবু টানিয়ে মির্জা ফখরুলের লোকজন বসেছে। ’
বিএনপির উদ্দেশে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যদি আগুন নিয়ে আসে, সন্ত্রাস করে, জনগণকে নিয়ে জবাব দেওয়া হবে। আমরা মামলা করব।
জঙ্গিদের, সাম্প্রদায়িকদের মাঠে নামিয়েছে, এ খবর আমরা রাখি না ভেবেছে?’ তিনি বলেন, ‘সমাবেশের নামে যদি কোনো বিশৃঙ্খলা করা হয়, কোনো সহিংসতা করা হয়, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করা হয়, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সমুচিত জবাব দেবে। তারা এখন জঙ্গিদের মাঠে নামিয়েছে, খবর আছে। অস্ত্রবাজদের মাঠে নামিয়েছে। আমাদের কাছে খবর আছে বস্তায় বস্তায় টাকা আসে দুবাই থেকে, টাকা আসে, হায়রে টাকা। ’
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতারা সময় স্বল্পতার কারণে বক্তব্য দিতে না পারায় ক্ষোভ জানান ওবায়দুল কাদের। সকালে নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পর অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা দীর্ঘ বক্তব্য দেন। গতকাল নামাজের আগেই অনুষ্ঠান শেষ করা হয়। এ কারণে বক্তব্য না দিয়েই অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে যান আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা।
সম্মেলনস্থলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা একাধিকবার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন। ওবায়দুল কাদের তাঁর বক্তব্যের সময় বারবার স্লোগান বন্ধ করতে বললেও তাতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কর্ণপাত করেননি। এ নিয়েও বক্তব্যে অসন্তোষ জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
আরো পড়ুন : কুমিল্লায় বিয়ের প্রলোভনে ডেকে নিয়ে তরুণীকে রাতভর সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, আটক ৫