শিশু আয়াত হত্যায় জবানবন্দি দিল আরেক কিশোর

আইন-আদালত ক্রাইম নিউজ প্রচ্ছদ শিশু অধিকার শিশু/কিশোর

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চট্টগ্রামে শিশু আলীনা ইসলাম আয়াত খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার আরেক কিশোর গতকাল বুধবার আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। এই কিশোর আলীনাকে খুনের দায়ে অভিযুক্ত আবির আলীর ঘনিষ্ঠ এবং সে আয়াতকে অপহরণের পরিকল্পনা থেকে হত্যাকাণ্ড সবই আগে থেকে জানত বলে আদালতকে জানিয়েছে।

মঙ্গলবার গ্রেপ্তার হওয়া কিশোর গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মেহনাজ রহমান পাঁচ পৃষ্ঠার জবানবন্দি রেকর্ড করেন বলে জানিয়েছেন আয়াত খুনের রহস্য উদঘাটনে গঠিত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) টিমের পরিদর্শক ইলিয়াস খান।

১৭ বছর বয়সী ওই কিশোর নগরীর ইপিজেড থানার বন্দরটিলা নয়ারহাট এলাকায় আয়াতের বাসার অদূরে ‘ভাই ভাই হোটেলের’ মেসিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিল।

একই এলাকার সাইফুল কলোনিতে ব্যাচেলর বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করত।

পিবিআই পরিদর্শক (মেট্রো) ইলিয়াস খান জানিয়েছেন, আবির আলীকে গ্রেপ্তারের পর তার ঘনিষ্ঠ ওই কিশোরকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তখন সে প্রাথমিকভাবে কিছু তথ্য দিলেও আবির আলীকে গ্রেপ্তার করে ঘটনার পুরো রহস্য উন্মোচনের পর ওই কিশোর সার্বিক বিষয় অবগত থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হয় পিবিআই টিম। এরপর মঙ্গলবার দুপুরে বাসার সামনে থেকে ওই কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তার কিশোর জবানবন্দিতে জানিয়েছে- বয়স এক-দেড় বছর কম হলেও শৈশব থেকেই আবির তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তবে তাকে ‘আবির ভাই’ বলে ডাকত। গত অক্টোবর মাসের শুরুর দিকে একদিন ওই এলাকায় নেভি গেটের পাশে নালার প্রতিরোধ দেয়ালের ওপর বসে আড্ডার সময় আবির তাকে জানায়- নয়ারহাট এলাকায় মনজুর বিল্ডিংয়ে অপহরণ করবে আর তার দাদার কাছ থেকে মুক্তিপণের টাকা নেবে। আবির তাকেও এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সঙ্গে থাকার প্রস্তাব দিলে সে প্রত্যাখান করে। তখন আবির তাকে কাউকে কিছু না বলার নির্দেশ দেয়।

ঘটনার দিন ১৫ নভেম্বর দুপুরে আবির গরুর গোশত দিয়ে ভাত খায়। আবির ভাত খেয়ে চলে যায়। বিকেল ৫টার দিকে লোকজনের ছোটাছুটি দেখে খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, আয়াতকে পাওয়া যাচ্ছে না। হোটেলে কাজ শেষে বের হওয়ার পর সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে আয়াতের বাসার বিপরীতে এক ভবনের নিচে আবিরের সঙ্গে তার দেখা হয়। দুজন মিলে ওই এলাকার লেবার কলোনির দিকে আয়াতকে খুঁজতে বের হয়।

এ সময় আবির জানায়, আয়াতকে অপহরণের পর মেরে ফেলেছে, লাশ আকমল আলী রোডের পকেট গেট এলাকায় তার মায়ের বাসায় রেখেছে। ওই বাসায় মা এবং বোনের সঙ্গে সে থাকত। আবির ভাই জানায়, দুই-একদিন পর আয়াতের দাদার কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করবে। টাকা নেওয়ার সময় আমি থাকলে আমাকেও কিছু টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেয়। আমি রাজি হইনি। আয়াতকে মেরে ফেলার কথা শুনে ভয় পেয়ে বাসায় চলে যাই। ’

জবানবন্দিতে ওই কিশোর আরো জানায়, মানুষ সন্দেহ করবে- এই ভয়ে আয়াতকে মেরে ফেলার বিষয়টি জানার পরও সে কাউকে কিছু জানায়নি।

আরো পড়ুন : কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ৫২৫০ কোটি টাকা ধার নিয়েছে পাঁচ ইসলামি ব্যাংক 

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *