সিলেট ব্যুরো: বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম হলো ‘প্রেসিডিয়াম বডি’। ২২তম জাতীয় সম্মেলনে এই প্রেসিডিয়াম বডি থেকে নেতৃত্ব হারিয়েছে সিলেট। এর আগে সর্বশেষ প্রতিনিধি ছিলেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। দলের ২১তম জাতীয় সম্মেলনে তাকে প্রেসিডিয়াম সদস্য করা হয়েছিল। তিনি সিলেট বিভাগের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। এবারের সম্মেলনে ঘোষিত নতুন কমিটি থেকে নাহিদকে সরিয়ে জাতীয় উপদেষ্ঠা পরিষদে নেওয়া হলে ‘প্রেসিডিয়াম বডি’ তে নেতৃত্ব হারায় সিলেট। তবে সিলেটের শীর্ষস্থানীয় অনেক নেতা বলেছেন পুনর্গঠন প্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি। চুড়ান্ত সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
দলের হাইকমান্ডের প্রতি আস্থা জানিয়ে মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন বলেন, দল পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবেনা। নেত্রীর হাতে রযেছে সব ক্ষমতা। দলের স্বার্থে যে সিদ্ধান্ত নিবেন আমরা সেটাকে স্বাগত জানাবো। তবে আশা করবো দলের ত্যাগী ও স্বচ্ছ ব্যক্তিরা কমিটির শুন্য পদগুলোতে স্থান পাবে।
জানা যায়, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে সিলেটের অবস্থান অতীতে ছিল অত্যন্ত গৌরবের। দেশের প্রাচীণতম এই দলটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরামে বৃহত্তর সিলেটের নেতৃত্ব সবসময় ছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময় দল ও সরকারে সিলেটের নেতারা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দল ও সরকার পরিচালিত হলে ওই সময়েও সিলেটীদের দাপট ছিল প্রচুর। প্রয়াত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ ও বিশিষ্ঠ পার্লামেন্টেরিয়ান বাবু সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
সিলেটের রাজনীতির সোনালী অতীত স্মরণ করে জেলার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে লালন করে এগিয়ে যেতে হবে। হতাশার কিছু নেই। দলের গঠনতন্ত্র মোতাবেক প্রেসিডিয়াম বডিতে এখনও দু’টি পদ খালি রয়েছে। শুন্য এ পদগুলো পূরণ করতে নেত্রী চাইলে সিলেট থেকে যে কাউকে রাখতে পারেন। তবে সিলেট থেকে প্রেসিডিয়াম বডিতে থাকতে হবে এমন কোন বাধ্য বাধকতা নেই।
শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন ওবায়দুল কাদের। এই নিয়ে টানা দশমবারের মতো শেখ হাসিনা সভাপতি আর ওবায়দুল কাদের তৃতীয়বার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে নতুন ইতিহাস গড়লেন। এদিকে দ্বিতীয় মেয়াদে কেন্দ্রীয় সাংগঠনকি সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল।
এবারের সম্মেলনে সিলেট থেকে যোগ দিয়েছিলেন ৪৯৮ কাউন্সিলর ও ডেলিগেটস। তাদের মধ্যে ১৬৬ কাউন্সিলর ও ৩৩২ ডেলিগেটস ছিলেন। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ স্থানীয় নেতারা তারা নিশ্চিত করেন।
আরো পড়ুন : সিলেটে সুরমা নদী থেকে বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার