ভোলাহাট (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ কি নেই ভোলাহাটের চরধরমপুর আশ্রায়ণ প্রকল্পে? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্রয়হীনদের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেয়ায় ১’শ পরিবারের প্রায় ৪’শ মানুষ ভালোবাসা আনন্দ উল্লাস আর খুশিতে দিন কাটাচ্ছেন উপকারভোগীরা। রাস্তার পাশে খাসজমিতে বাড়ী করে কোন রকম বসবাস করে আসছিলেন পরিবারগুলো। এখন ২শতাংশ জমি পাকা লাল সবুজের টিনের ছাউনির বাড়ীতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেশ আনন্দে ও সুখে দিন কাটাচ্ছেন অসহায় মানুষগুলো। সারি সারি পাকা বাড়ীতে নাক ডাকিয়ে ঘুমাতে পারছেন তাঁরা। এছাড়াও গরু ছাগল হাঁস মুরগী সবজি চাষ করে কেউ কেউ আবার মুদি দোকান দিয়ে বেশ স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন । উন্নয়নের ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে পরিবারগুলোতে। পরিবারের উন্নয়নের সাথে সাথে ছেলে মেয়েদের স্কুলমুখী করছেন তাঁরা। চরধরমপুর আশ্রায়ণ প্রকল্পের পূর্ব পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে মহানন্দা নদী। ওপারে ভারত এপারে বাংলাদেশ। আশ্রায়ণ প্রকল্প ঘিরে গড়ে উঠেছে রাস্তা, খেলার মাঠ, স্কুল, মসজিদ,বিদ্যুৎ, বিশুদ্ধ পানি, কবরস্থান কি নেই এখানে। কোন কিছুই যেন কমতি নেই এখানে। অসহায় মানুষগুলোর মুখে হাসি ফুটাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রসংশায় পঞ্চমুখ আশ্রয় পাওয়া পরিবারের সদস্যদের মুখে। প্রধানমন্ত্রীর এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন ভোলাহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে তাবাসসুম। তাঁকে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ কাউসার আলম সরকার। মনোমুগ্ধকর এ আশ্রায়ণ প্রকল্প যে কেউ দেখলে মন জুড়িয়ে যাবে। তাই তো কেউ কেউ এ আশ্রায়ণ প্রকল্পের নাম দিয়েছেন মুজিব পল্লী কেউ বা মিনি শহর। সরজমিনে গিয়ে কথা হয় আশ্রয় পাওয়া গৃহহীন মোস্তফার স্ত্রী রেহেনার সাথে। তিনি জানান খাসে বাড়ী ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাকা বাড়ি দেয়ায় ৩ ছেলে মেয়েকে নিয়ে বেশ সুখে শান্তিতে টাকা বাড়ীতে বসবাস করছি।
সোহেলের স্ত্রী শারমিন বলেন, আমার কোন বাড়ী ঘর ছিল না। এখন নিজের বাড়ীতে ১ মেয়ে ২ ছেলে নিয়ে আমরা খুব ভালো ভাবে জীবন যাপন করছি।
শিরিনা বলেন, আমি ধরমপুর গ্রামে ছিলাম। বাড়ী ছিল খাসে। আমার ২ ছেলে ছোট ছেলে মাসুম রানা ঝাউবোনা কারিগরি কলেজে পড়ছে। আগের চেয়ে এখন ভালো আছি বলে জানান।
এরশাদের স্ত্রী ফাতেমা বলেন, রাস্তায় বাড়ী ছিল এখানে এসে মুদিদোকান দিচ্ছি। বাড়ী ঘর ছিল না । খাসজমিতে বাড়ী ছিল। এখন বেশ ভালো আছি।
শারীরিক প্রতিবন্ধী আনারুল বলেন, আমি প্রতিবন্ধী মানুষ। রাস্তার পাশে খাস জায়গায় বাড়ী ছিল। এখন বাড়ী পেয়ে বেশ আনন্দে আছি। তবে তিনি বলেন, আমি সিএনজি চালায় । তিনি আরো বলেন, এখানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ী পেয়ে অনেকেই গরু ছাগল সবজি চাষ করে বেশ স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন।
প্রতিবন্ধী নাজমুল জানান, আমার কোন ঘরবাড়ী ছিল না। প্রধানমন্ত্রী আমাকে একটি বাড়ী দিয়ে স্থায়ী ঠিকানা করে দিয়েছেন। আমি তাঁর জন্য দোয়া করবো।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ কাউসার আলম সরকার বলেন,সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত হয়ে কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করেছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে তাবাসসুম জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণ করে দিয়ে অসহায় মানুষগুলোর মুখে হাসি ফুটাতে পেরেছেন। ভোলাহাট উপজেলায় ১হাজার ১’শ ২২ জন গৃহ হারা মানুষ পাকা বাড়ি পেয়ে নিজ ঠিকানা খুঁজে পেয়েছেন। উপকারভোগীরা এখন সবজি চাষ করছেন। গরু ছাগল পালন করছেন। কেউ কেউ ব্যবসা করছেন। প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে অসহায় মানুষগুলো এখন স্বাবলম্বী হচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাঁদের খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। যখন যে নির্দেশ পায় দ্রæত বাস্তবায়নে ঝাঁপিয়ে পড়ি বলে জানান তিনি।
গোলাম কবির- ভোলাহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
আরো পড়ুন : গোবিন্দগঞ্জে মরহুম জুলফিকার মাহমুদ খসরুস্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্টে পীরগঞ্জ একাদশের জয়লাভ