আগের নিয়মে ভাতা ও পেনশন গ্র্যাচুয়িটি সুবিধার দাবিতে আন্দোলনে নামা ট্রেনের রানিং স্টাফরা কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন না।
রোববার রাজধানীর রেল ভবনে রেলসচিব ড. হুমায়ুন কবিরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর কর্মবিরতি কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানায় রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও কর্মচারী শ্রমিক সমিতি।
রোববার মধ্যরাত থেকে ট্রেন চালকদের কর্মবিরতির কর্মসূচি ছিল। এতে সারাদেশে রেল যোগাযোগ বন্ধের শঙ্কা তৈরি হয়। রোববার বিকেল তিনটা থেকে শুরু হওয়া বৈঠকে সচিব দাবি পূরণে উদ্যোগ নেওয়ার আশ্বাস দিলে রানিং স্টাফরা লিখিত দাবি করেন।
রাত আটটার দিকে শেষ হওয়া বৈঠকের কার্যবিবরণী অনুযায়ী, আগের নিয়মে ভাতা ও পেনশন সুবিধা পুনর্বহালে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি স্বল্পতম সময়ে নিষ্পত্তি করার সর্বাত্মক উদ্যোগ নেবে রেল মন্ত্রণালয় ও রেলওয়ে।
চালক (লোকো মাস্টার), গার্ড ও টিকিট পরিদর্শকরা (টিটি) রানিং স্টাফ। তারা দিনে আট ঘণ্টার বেশি কাজ করলে বা ১০০ মাইলের বেশি ট্রেন চালালে একদিনের বেতনের সমপরিমাণ টাকা ভাতা পান। ভাতার ৭৫ শতাংশ পেনশনে যোগ হয়। জনবল সঙ্কটের কারণে, রানিং স্টাফদের দিনে ১২ ঘণ্টা কাজ করার নিয়ম করেছে রেল। তবে তাদের সপ্তাহে সাতদিনই এর চেয়ে বেশি সময় কাজ করতে হয়। এ কারণে মাসিক বেতনের চেয়েও বেশি ভাতা পান রানিং স্টাফরা।
গত ৩ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপনে জানায়, বেতনের চেয়ে ভাতা বেশি হতে পারবে না। ভাতা পেনশনে যোগ হবে না। ১৮৬২ সাল থেকে পেয়ে আসা সুবিধা বাতিলের প্রতিবাদে বর্তমানে দিনে আট ঘণ্টার বেশি কাজ করছেন না চালকরা।
তবে ২৪ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয় চিঠিতে জানায়, আগের নিয়মেই ভাতা দেওয়া হবে। কিন্তু ভাতা যোগ হবে না পেনশনে। রোববারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ৩ নভেম্বরের আগে যারা অবসরে গিয়েছেন তাদের আগের নিয়মে পেনশন দিতে সুপারিশ করা হবে অর্থ মন্ত্রণালয়ে।
পুরনো নিয়মে পেনশনের দাবিতে ডাকা কর্মবিরতি প্রত্যাহারের কথা জানিয়ে রানিং স্টাফ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান বলেন, সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা লিখিত আশ্বাস দিয়েছেন। প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হলে আবারও আন্দোলনে নামব।
রানিং স্টাফরা দিনে আট ঘণ্টার বেশি কাজ না করায় চালক সঙ্কটে গত মঙ্গলবার থেকে বহু লোকাল, কমিউটার ট্রেন এবং মালগাড়ি বিলম্বে চলেছে কিংবা এগুলোর যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। কর্মবিরতির কর্মসূচি প্রত্যাহার হলেও রানিং স্টাফরা আট ঘণ্টার বেশি কাজ করবেন কিনা- সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
বৈঠকে রেলের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার, অতিরিক্ত মহাপরিচালক মঞ্জুল উল আলম চৌধুরী, সরদার সাহাদাত আলী, রানিং স্টাফ সমিতির সভাপতি রফিক চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।