নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর গুলশানের ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে নারীর মৃত্যুর ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ। বহুতল ভবনটি স্পা সেন্টার পরিচালনাকারী হাসানুজ্জামান ওরফে হাসান, তাঁর স্ত্রীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, স্পা সেন্টারের আড়ালে সেখানে ‘অনৈতিক’ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন হাসানুজ্জামান। এই অভিযোগে হাসানুজ্জামান ও তাঁর স্ত্রীকে আগেও একাধিকবার গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে তাঁরা জামিনে বেরিয়ে এসে আবার এই কাজ শুরু করেন।
বুধবার দুপুরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) ভ্রাম্যমাণ আদালত গুলশান-২ নম্বরের ৪৭ নম্বর সড়কের একটি ভবনে অভিযানে গিয়ে চতুর্থ তলার স্পা সেন্টারের দরজায় কলবেল চাপেন। অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে সেখানকার দুই নারী কর্মী পালাতে গিয়ে ভবনের চতুর্থ তলা থেকে নিচে লাফিয়ে পড়েন। এতে একজন মারা যান। অন্য নারী গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গুলশানের আবাসিক এলাকায় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনার বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ স্পা সেন্টারটিতে যান ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার গুলশান থানায় দুটি মামলা করা হয়েছে বলে ওই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বি এম ফরমান আলী জানিয়েছেন। তিনি রাতে প্রথম আলোকে বলেন, স্পা সেন্টারে অভিযানের সময় সেখান থেকে লাফিয়ে পড়ে কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। আর প্রতিষ্ঠানের মালিক হাসানুজ্জামান, তাঁর স্ত্রী ও স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপক সাইনুর আক্তার (পায়েল) এবং ফ্ল্যাটের মালিক এ টি এম মাহাবুবুল আলমের বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগে ডিএনসিসির পক্ষ থেকে আরেকটি মামলা করা হয়। মামলার বাদী হয়েছেন ডিএনসিসির প্রসিকিউশন কর্মকর্তা আবদুস সালাম।
ওসি ফরমান আলী বলেন, লোকলজ্জার ভয়ে লাফিয়ে পড়ে ওই নারী মারা গেছেন বলে পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে। তিনি জানান, অভিযানের সময় স্পা সেন্টার থেকে ছয়জন নারী ও তিন যুবককে আটক করা হয়েছিল।
পুলিশের গুলশান বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, আলোচিত চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটটি স্পা সেন্টার বলা হলেও সেখানে তেমন কিছু ছিল না। অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগে গত দুই মাসে ওই স্পা সেন্টারে অন্তত চারবার অভিযান চালিয়ে হাসানুজ্জামান ও তাঁর স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু কিছুদিনের মাথায় তাঁরা আবার জামিনে বেরিয়ে পুরোনো কর্মকাণ্ডে যুক্ত হন। স্পা সেন্টারের মালিক হাসানুজ্জামানের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় ছয়-সাতটি মামলা রয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা ফরমান আলী বলেন, মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আরো পড়ুন : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেলো বিজিবি সদস্য মোস্তাফিজারের