শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর থেকেঃ করোনা আর শীতকে উপেক্ষা করে উত্তরের সীমান্ত ঘেষা জেলা দিনাজপুরে ৬ষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচনের ভোট উৎসব চলছে। দিনাজপুরে ৪টি উপজেলার মোট ২১টি ইউপি নির্বাচনী এলাকা এখন উৎসবমূখর হয়ে উঠেছে। তবে,উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে দিনাজপুর সদর উপজেলার ১ নম্বর চেহেলগাজী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।
এই ধাপে নির্বাচনে ভোট হচ্ছে,দিনাজপুর সদরে ৯টি, বিরল উপজেলায় ৬টি, বীরগঞ্জে ২টি ও ঘোড়াঘাট উপজেলায় ৪টি মিলে মোট ২২টি ইউনিয়নে। করোনার রেড জোন হিসেবে ঘোষিত জেলা ও তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে ভোটাররা ভোট দিচ্ছেন। আজ সোমবার দিনাজপুরে সর্বোনিন্ম তাপমাত্রা ছিলো ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাই,সকালে ভোটারের উপস্থিতি তেমন একটা না থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে কেন্দ্র গুলোতে ভোটারের উপস্থিতি বাড়ছে। নারী ভোটারের উপস্থিতিও লক্ষণীয়।
৪ উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে ১০৫৫ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন।
এবারের নির্বাচনে ইভিএম-এ এই প্রথম ভোট দিতে পেরে অনেক ভোটার যেমন খুশী, তেমনি আবার কিছু কিছু ভোটার এতে নাখোশও হয়েছেন। ভোট প্রদানে জালিয়াতির শংকা না থাকলেও এলাকায় প্রভাব বিস্তার,ভোটারদের হুমকি ধামকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। টাকাও উড়ছে এবার অন্যান্য নির্বাচনের চেয়ে বেশি।
নির্বাচন বিশ্লেষক ও বিশেজ্ঞরা মনে করছেন,সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ ভোট হলে ৬ষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচনে দিনাজপুরে ১৫টির বেশি ইউপিতে জিতবে বিরোধী দল তথা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কিছু কিছু এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। তবে,এ পর্যন্ত কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবন এ পাওয়া যায়নি।
সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্যে দিনাজপুর জেলা প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দিয়েছে।
এদিকে ভোট গ্রহণের ১৪ ঘন্টা আগে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে দিনাজপুর সদর উপজেলার ১ নম্বর চেহেলগাজী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যায় চেহেলগাজী ইউনিয়ন পরিষদের রিটার্নিং কর্মকর্তা বোচাগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সামসুল আযম এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান। আজ সোমবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। দিনাজপুর জেলা জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা শাহীনুর ইসলাম প্রামাণিক জানান, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।
নির্বাচন অফিস সুত্রে জানা গেছে, মোকলেসুর রহমান নামে এক ব্যক্তি উচ্চ আদালতে একই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী আনিছুর রহমান বাদশার বিরুদ্ধে ঋণ খেলাপির রিট করেন। গত ১৮ জানুয়ারি মামলাটিতে সমন জারি হয় এবং ৩০ জানুয়ারি মামলাটি নিষ্পত্তি হয়। যার ফলাফলে আনিছুর রহমান বাদশাকে ঋণ খেলাপি সাব্যস্ত করে চেহেলগাজী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ‘চেয়ারম্যান পদের প্রার্থিতা বাতিলের আদেশ দেন। এই আদেশের ব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করে আদালতের আদেশ কার্যকরে রিটকারী মোকলেসুর রহমান রিটানিং কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেন। এর প্রেক্ষিতে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।
প্রসঙ্গতঃ চেহেলগাজী ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা প্রায় ৩২ হাজার। মোট ১২টি কেন্দ্র ভোট গ্রহণের কথা ছিল। ওই ইউনিয়নে তিন জন চেয়ারম্যান প্রার্থী, মেম্বার প্রার্থী ৩৮ জন ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ১৫ জন প্রাার্থী ছিলেন।
শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর থেকে।