বামনা(বরগুনা) প্রতিবেদক: বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বরগুনার বামনা উপজেলার ডৌয়াতলা ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমানের বিরোধীতা করে সরকার দলীয় প্রার্থীর প্রস্তাবকারী হওয়ায় বরগুনার বামনা উপজেলার ডৌয়াতলা ইউনিয়নের হলতা ডৌয়াতলা ওয়াজেদ আলী খান ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. শফিকুল ইসলাম (টুকু) এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্য অভিযোগ করার প্রতিবাদে অধ্যক্ষের পক্ষে বৃহস্পতিবার(১৬ ফেব্রুয়ারী) বেলা ১১ টায় বামনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ওই কলেজের শিক্ষকরা।
বামনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে হলতা ডৌয়াতলা ওয়াজেদ আলী খান ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ সফিকুর রহমান চিকিৎসার জন্য ছুটিতে থাকায় তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিলন কৃষ্ণ হালদার।
অধ্যক্ষের লিখিত বক্তব্য থেকে জানা গেছে, বাংলা একাডেমীর সভাপতি কথা সাহিত্যিক ড. সেলিনা হোসেন এর শ্বশুরের নামে প্রতিষ্ঠিত হলতা ডৌয়াতলা ওয়াজেদ আলী খান ডিগ্রি কলেজের সুনাম ক্ষুন্ন করার উদ্দেশ্যে বামনা উপজেলার ৪নং ডৌয়াতলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো.মিজানুর রহমান বিভিন্ন সময়ে কলেজের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে আসছে। তার ধারাবাহিকতায় মো. মিজানুর রহমান কর্তৃক স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ গত ৬ ফেব্রæয়ারী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন দপ্তরে পাঠায়। যা মিথ্যা ও বানোয়াট।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষের লিখিত বক্তব্য থেকে আরো জানা গেছে, বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অধ্যক্ষ সফিকুর রহমান বর্তমান চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের পক্ষ না করায় চেয়ারম্যান তার বিরুদ্ধে ও কলেজের সম্মানহানী করতে এই মিথ্যা অভিযোগ করেন।
আরো জানাগেছে, চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান কলেজের সম্পত্তিতে বাস কাউন্টারের নামে দখল করে রয়েছে। এসব নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রতিবাদ করলে আরো ক্ষীপ্ত হয় ওই ইউপি চেয়ারম্যান।
এছাড়াও চেয়ারম্যানের অভিযোগে উল্ল্যেখ করা হয়েছে অধ্যক্ষ মো. মো. শফিকুল ইসলাম (টুকু) ২০০৫ সালে চাকুরী থেকে ইস্তফা দিয়েছেন যা আদৌ সত্য নয়। তিনি তৎকালীন বিএনপি জোট সরকারের নেতাকর্মীদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়ে কলেজ থেকে ছুটি নিয়ে কিছুদিন এলাকা ছিলেন না। তবে কোন ইস্তফা দেয়নি। জাল ইস্তফা পত্র তৈরী করে জমা দেওয়া হয়েছিলো। যা পরবর্তীতে প্রমানিত হওয়ায় পুনরায় তিনি চাকুরী ফিরে পান। এছাড়াও চেয়ারম্যানের অভিযোগের ৬টি দফাই উদ্দেশ্য প্রনোদীত।
এদিকে কলেজটির অধ্যক্ষ মো. শফিকুল ইসলাম (টুকু) মুঠোফোনে জানান, হলতা ডৌয়াতলা ওয়াজেদ আলী খান ডিগ্রি কলেজের অফিস সহকারি মো. গোলাম মোস্তফা(৫৭) এর মরদেহ ২০২১ সালে ২১ মে নিখোঁজের তিনদিন পর উদ্ধার করে পুলিশ। অফিস সহকারীকে হত্যার এক বছরের মাথায় তার কাছে থাকা কলেজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন দলিলাদি কিভাবে চেয়ারম্যান হাতে পেয়েছে আমার বোধগম্য নয়। তবে চেয়ারম্যান যে অভিযোগ গুলো করেছেন তার একটিও সত্য নয়। আমাকে ২০০৫ সালে বিএনপি সরকারের আমলেও একই বিষয়ে হয়রানী করা হয়েছিলো। পরে সকল একাডেমিক সনদপত্র আমি সঠিক নিয়মে জমাদিয়ে অধ্যক্ষ হিসাবে নিয়োগ পেয়েছি। মুলকথা আমি ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করায় চেয়ারম্যান আমার বিরুদ্ধে ক্ষীপ্ত হয়ে এসব করতেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বামনা প্রেসক্লাব সভাপতি মোঃ নেছার উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক নাসির মোল্লা, সাবেক সভাপতি ওবায়দুল কবির আকন্দ দুলালসহ স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ ও হলতা ডৌয়াতলা ওয়াজেদ আলী খান ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা।
এব্যাপারে উপজেলার ডৌয়াতলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান মিজান বলেন যে, হলতা ডৌয়াতলা ওয়াজেদ আলী খান ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ সফিকুল ইসলাম জাল সার্টিফিকেট ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে বেসরকারি স্কুল কলেজ নীতিমালা ও জনবল কাঠামো ৯৫ এর বিধি বহির্ভুতভাবে নিয়োগ নিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় ১৬/১৭ বছর যাবৎ সরকারী বেতন ভাতাদি ভোগসহ প্রতিষ্ঠানের সমূদয় আয় আত্মসাৎ করেছেন। তাই আমি ৬ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেছি। যার ডকেট নম্বর-২৮১।
বামনা(বরগুনা) প্রতিবেদক
আরো পড়ুন : ফাইনালেও শিরোপা জিততে শান্তর ব্যাটের দিকে তাকিয়ে সিলেট