ডজন মামলার আসামি কিভাবে কোটিপতি স্বর্ণের ব্যবসায়ী বনে গেলেন

প্রচ্ছদ প্রবাস মুক্তমত লাইফ স্টাইল শিল্প প্রতিষ্ঠান

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : দুবাইয়ের আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান ওরফে সোহাগ মোল্লা ওরফে রবিউল ইসলাম রবি গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়া আশুতিয়া গ্রামের দিনমজুর মতিয়ার রহমান মোল্লার ছেলে।

মতিয়ার রহমান মোল্লা একসময় বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলায় ফেরি করে সিলভারের হাঁড়িপাতিল বিক্রি করতেন। এখানেই ১৯৮৮ সালে সোহাগ মোল্লার জন্ম হয়। ২০০৫ সালে চিতলমারী সদরের একটি বিদ্যালয় থেকে সোহাগ মোল্লা এসএসসি পাশ করেন। দারিদ্র্যতার কারণে এর পরে আর তার লেখাপড়া হয়নি। চিতলমারী থেকে ২০০৮ সালে ভাগ্যের অন্বেষণে তিনি ঢাকা চলে যান।

বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে আরাভ খান তার ফেসবুক লাইভে এসে তার কোটিপতি হওয়ার গল্প বলেন।

তিনি বলেন, আমি একজন দিনমজুরের ছেলে। আমি ঢাকায় এসে অনেক কষ্ট করেছি। হোটেলে কাজ করেছি। অনেক কষ্ট করে আমি আজ এ অবস্থানে এসেছি। অনেক কষ্ট করে আমি আমার এই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়েছি। এখানে আমার কিছু ব্যবসায়িক প্রতিপক্ষ তৈরি হয়েছে। তারাই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা রটাচ্ছে। গণমাধ্যমে যেসব খবর আসছে তা পুরোপুরি সত্য নয় বলে উল্লেখ করেন এই আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী।

নিজের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলার কথা তুলে ধরে আরাভ খান বলেন, আমার মামলা হয়েছে এ কথা সত্য। তবে আমি কোনো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নই। পুলিশ আমাকে অস্ত্র মামলায় জেলে দিয়েছে। এ কথা সত্য। তবে আমি দোষী না। আমি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিভিন্ন সময় জেলে গেছি। আবার জামিনে বেরিয়ে এসেছি। আদালত যদি আমাকে সাজা দেন, তা হলে আমি সে সাজা মাথা পেতে নেব।

এর আগে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় দুবাইয়ের হিন্দ প্লাজায় আরাভ জুয়েলারি নামে এই স্বর্ণের দোকানটি উদ্বোধন করেন।

এদিকে ঢাকায় পুলিশ হত্যাসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ডের দায়ে ঢাকার বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে প্রায় ডজনখানেক মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। এর পর পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে আরাভ খান ভারত হয়ে চলে যান দুবাইয়ে।

তবে দুবাইয়ে আরাভ খানের এই স্বর্ণের দোকান উদ্বোধনের খবর জানাজানি হলে এলাকায় আলোচনায় ঝড় ওঠে। সবার মুখে মুখে একই প্রশ্ন সোহাগ মোল্লা কীভাবে রাতারাতি এত টাকার মালিক বনে গেলেন।

সরেজমিন গিয়ে কথা হয় সোহাগ মোল্লা ওরফে আরাভ খানের চাচাতো ভাই ফেরদৌস মোল্লার সঙ্গে। তিনিও সোহাগ মোল্লা ওরফে আরাভ খান অল্প দিনে এত টাকার মালিক হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। গত কয়েক দিন আগে সোহাগ মোল্লা ওরফে আরাভ খান তার দুই বোন ও মা বাবাকে দুবাই নিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন তার চাচাতো ভাই ফেরদৌস মোল্লা।

হিরণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাজহারুল আলম পান্না বলেন, সোহাগ মোল্লা ওরফে আরাভ খান একই ব্যক্তি। আমার গ্রামেই তার বাড়ি। সে একটি দরিদ্র পরিবারের সন্তান। গত পাঁচ সাত বছর ধরে সে এলাকায় আসে না। হঠাৎ করে সে কীভাবে এত টাকার মালিক হলো এটা আমাদের বোধগম্য নয়।

কোটালীপাড়া থানার ওসি মো. জিল্লুর রহমান বলেন, সোহাগ মোল্লা ওরফে মোল্লা আপন, ওরফে রবিউল ইসলাম রবি, ওরফে শেখ হৃদি, ওরফে আরাভ খানের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত ৯টি ওয়ারেন্ট আমার থানায় এসেছে। আমি ওয়ারেন্টগুলো তামিল করার জন্য চেষ্টা করেছি। কিন্তু তার কোনো হদিস আমরা পাইনি।

আরো পড়ুন : এবার ডিবি পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করবে সাকিব ও হিরো আলমকে 

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *