প্রবৃত্তির অনুসরণ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন

ধর্ম প্রচ্ছদ লাইফ স্টাইল হ্যালোআড্ডা

রমজান সংযমের মাস। রমজান সবরের মাস। রোজা রাখার প্রতি মুসলিম উম্মাহকে প্রেরণা দিয়ে মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানী চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে পরকালীন প্রতিদান পাওয়ার আশায় রোজা রাখবে তার অতীত জীবনের সকল পাপ ক্ষমা করে দেয়া হবে। (বুখারি শরীফ: ১ম খণ্ড পৃ.২৫৫) সিয়াম সাধনার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি হালাল খাদ্য ও পানীয়কে আল্লাহর নির্দেশের কারণে বর্জন করে প্রবৃত্তির অনুসরণ থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন করে। সেই সঙ্গে তারাবি, তাহাজ্জুদ দান-সদকাহ, কোরআন তিলাওয়াতসহ অন্যান্য ইবাদত করার মাধ্যমে তার আত্মার পরিশুদ্ধতা অর্জিত হয়। পবিত্র রমজান মাসে হাদিসে নববীতে উল্লিখিত কিছু আমল দ্বারা আমরা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারি।

আল্লাহর সন্তুষ্টি ও রহমত লাভের উদ্দেশ্যে সিয়াম সাধনা করা: হযরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, যখন রমজান মাস আসে আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়। অপর বর্ণনায় রয়েছে বেহেশতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, দোযখের দরজাসমূহ বন্ধ করা হয় এবং শয়তানকে শৃঙ্খলিত করা হয়। অপর বর্ণনায় আছে, রহমতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয় (বুখারী ও মুসলিম)।
রমজান মাসে যেহেতু বেহেশতের ও রহমতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয় সেহেতু রোজা রেখে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তাঁর রহমতের আশা করবো।

মুখ ও জিহ্বাকে সংযত রাখা: পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি নিজের মুখ ও জিহ্বাকে সংযত রাখতে হবে। মিথ্যা, অশ্লীল কথাবার্তা, গালিগালাজ, গীবত, পরনিন্দা, অভিশাপ দেয়া ও চোগলখোরিসহ অন্যান্য অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি যিকির করে স্বীয় জিহবাকে তরতাজা রাখবে, কাল কিয়ামতের দিন সে হাসতে হাসতে জান্নাতে প্রবেশ করবে।

নিয়মিত তারাবির নামাজ আদায় করা: হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) রমজান মাসের নামাজ কায়েম করার জন্য উৎসাহ দিতেন; কিন্তু তিনি এ বিষয়ে খুব তাকিদ দিতেন না। বরং এরূপ বলতেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের নিয়তে রমজান মাসে নামাজ কায়েম করবে তার পূর্ববর্তী সগীরা গুনাহসমূহ ক্ষমা করা হবে।-মুসলিম
কোরআন তিলাওয়াত করা: নফল ইবাদতের মধ্যে সর্বোত্তম ইবাদত হলো কোরআন তিলাওয়াত করা। হযরত নুমান বিন বাশির (রা.) থেকে বর্ণিত নবী করীম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আমার উম্মতের সবচেয়ে উত্তম ইবাদত কোরআন তিলাওয়াত করা।-বায়হাকী, শুআবুল ঈমান: হা. ১৮৬৯, মুসনাদুস শিহাব: ১১৯৫)।

অন্য হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি রমজান মাসে আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে একটি নফল কাজ করবে সে ঐ ব্যক্তির সমান হলো যে, অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করলো।-মিশকাত :১৮৬৮
সুতরাং রমজান মাসে কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে আমরা অধিকতর সওয়াবের অধিকারী হবো।
বেশি করে দান-সদকাহ করা: মহান আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, যারা আল্লাহর রাস্তায় স্বীয় ধন-সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উদাহরণ একটি বীজের মতো, যা থেকে সাতটি শীষ জন্মায়। প্রত্যেকটি শীষে একশ’ করে দানা থাকে। আর আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা করেন (সওয়াবে) কয়েকগুণ বৃদ্ধি করে দেন। আল্লাহ অতি প্রাচুর্যময় এবং সর্বজ্ঞ।-সূরা বাকারাহ: ২৬১
আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে রমজানের করণীয় সম্পর্কে অবগত হয়ে এর উপর যথাযথ আমল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

আরো পড়ুন : ‘সভারকার’ নয় আমি একজন গান্ধী, আমি ক্ষমা চাইবো না

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *