সিলেট ব্যুরো: সিলেটের অন্ধকার জগতের আলোচিত নাম সীমা বেগম পপি। মানুষের পকেট কাটা, মাদক ব্যবসা, অসামাজিক কার্যকলাপ, মারধর ও ছিনতাইসহ নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া নিজের অবস্থান শক্ত করতে গড়ে তুলেছেন একটি কিশোর গ্যাং। আর কিশোর গ্যাংয়ের নিয়ন্ত্রণ করে পপির ছেলে অন্তর। এমনটাই জানালেন স্থানীয় লোকজন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। এদিকে কখনও গ্রেফতার হয়ে জেল হাজতে গেলে তাকে দ্রুত বের করে আনে একটি পক্ষ। বের হয়ে তিনি শেল্টারদাতাদের আশ্রয়ে আবার ফিরেন পূরনো পেশায়। ৩৮ বছর বয়সী ওই নারীকে অপকর্মে কারা শেল্টার দেয়- এমন প্রশ্ন সামনে এসেছে সচেতন মহলের।
আরো পড়ুন : বগুড়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ভুয়া সিল-সাক্ষর ব্যবহার করে প্রতারণা
পপি সর্বশেষ ধরা খেয়েছেন গত সোমবার রাতে। নগরীর ব্যস্ততম এলাকায় এক মাহিলার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে মোবাইল চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েন। এসময় স্থানীয় জনতা ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশের হাতে তাকে সোপর্দ করেন। সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ আটকের বিষয়টি স্বীকার করেন।
আরো পড়ুন : জেনে নিন কিভাবে ফরেক্স ট্রেডিংয়ের নামে টাকা পাচার হচ্ছে
পুলিশ ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, নগরীর এমএজি ওসমানী হাসপাতাল, জিন্দাবাজার ও বন্দরবাজার এলাকায় পকেটমার হিসেবে পপির পরিচিতি। বিশেষ করে ওসমানী হাসপাতালে তার দৌরাত্ম্য বেশি। সকাল হলেই বোরকা পরে নগরীর অলিগলি ও পথের পাশাপাশি বিভিন্ন মার্কেটে ঢুঁ মারেন তিনি। ঘুরে বেড়ান ওসমানীসহ সরকারি-বেসরকাীর বিভিন্ন হাসপাতালে। সুযোগ বুঝে কৌশলে ছিনিয়ে নেন স্বর্ণালঙ্কার, মোবাইল ফোন ও টাকা-পায়সা। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। কিন্তু প্রত্যেকবারই জেল থেকে বেরিয়েই পুরোনো পেশায় জড়িয়ে পড়েন।
আরো পড়ুন : অনলাইন জুয়ার টাকা পাচারের অভিযোগে ৯ যুবককে গ্রেফতার করেছে গাজীপুর পুলিশ
পুলিশ আরো জানায়, পপির বিরুদ্ধে এসএমপির শাহপরাণসহ বিভিন্ন থানায় প্রায় অর্ধশত মামলা রয়েছে। তার মূল পেশা চুরি। কিন্তু পাশাপাশি ছিনতাই, অসামাজিক কাজ, মাদক কেনা-বেচা সহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত তিনি। ২০১৯ সালের ৩০ মে নগরীর জিন্দাবাজার থেকে পপি ও তার সহযোগী স্বপ্নাকে আটক করে পুলিশ। পরদিন পুলিশ প্রসিকিউশনের মাধ্যমে আদালতে প্রেরণ করে। ওইদিনই তারা বেরিয়ে আসেন জামিনে। আরো পড়ুন : মাজহারুল আবারও কি সিলেট পাসপোর্ট অফিসে ফিরবেন?
একই বছর ৩০ জুন নগরীর জিন্দাবাজার সিটি সেন্টারের সামনে থেকে স্বপ্না ও পপিকে আটক করে পুলিশ। থানাহাজতে তাদেরকে এক রাত আটকেও রাখা হয়। পরে রহস্যজনক কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। প্রসিকিউশনের মাধ্যমে তাদেরকে আদালতে হাজির করা হলে সেখান থেকে সহজেই বের হয়ে আসেন পপি ও স্বপ্না। কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ ওকে নিউজ টুয়ে ন্টিফোর বিডি ডট কম এর প্রতিবেদককে বলেন- উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ ও সাক্ষীর অভাবে তিনি দ্রুত জামিন পান।
আরো পড়ুন : ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ লেখা গুলির চালানের গন্তব্য কোথায় ছিল ?
পপির বাড়ি হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার বামুরা গ্রামে। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। নগরীর শাহজালাল উপশহরের এইচ ব্লকের ৪ নং রোডের বিলের পার এলাকায় গড়ে তুলেছেন ৪ তলা বাসা। সেখানে পরিবার নিয়ে থাকেন পপি। ওই বাসাতে রাত-দিন রয়েছে পরিচিত-অপরিচিত মানুষের আনাগুনা। বাসার পাশেই পপির একটি মোদি দোকান ও খামার রয়েছে। তার স্বামী সেই দোকান ও খামার দেখাশুনা করেন বলে পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান।
আরো পড়ুন : গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে বসতবাড়িতে চুরির সময় আটক যুবককে পিটিয়ে হত্যা