শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি: রবিবার ভোর ৫টা ৪০ মিনিটেই পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। প্রথম দিন প্রথম আট ঘণ্টায় সেতুর উভয় পার থেকে আয় হয়েছে ৮২ লাখ ১৯ হাজার ৫০ টাকা। রবিবার ভোর ৬টা থেকে উভয়মুখী যানবাহনের চাপ শুরু হয় সেতুতে। বেলা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সেতুর জাজিরা পয়েন্ট টোল প্লাজায় ঢাকামুখী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেলের দীর্ঘ লাইন পড়ে।
বিকেলে বাইকারদের অতিরিক্ত চাপে অন্য যানবাহন টোল প্লাজা অতিক্রমে বাড়তি সময় লাগে। সেতু চালু হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকরা।
২৫ জুন শনিবার পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার ভোর ৬টা থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভোর থেকেই ঢাকামুখী যানবাহনের ভিড় শুরু হয় পদ্মা সেতুর উভয় টোল প্লাজায়। বাধ্য হয়ে ২০ মিনিট আগেই জাজিরা প্রান্ত উন্মুক্ত করা হয়।
পটুয়াখালী, বরিশাল, খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে যাত্রীরা ও ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন ঢাকায় যাচ্ছে। তবে এদিন বেশি ভিড় ছিল একনজরে পদ্মা সেতু দেখতে আসা মানুষের। আবার কেউ এসেছে প্রথম দিন পদ্মা সেতু দিয়ে পারাপার হওয়ার স্মৃতি ধরে রাখতে। বিকেলে মোটরসাইকেলের ঢল নামে উভয় প্রান্তে। অধিকাংশই ঘুরতে আসে ১০০ টাকার টোল দিয়ে। তবে টোল প্লাজায় টিকিটের জন্য খুব বেশি দেরি করতে হয়নি যানবাহনগুলোকে। মোটরসাইকেল কাউন্টারে দেখা যায় প্রতি ১০-২০ সেকেন্ডে টিকিট দেওয়া হচ্ছে। টাকা দিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই টিকিট নিয়ে যানবাহনগুলো সেতু পার হচ্ছে।
ট্রাকচালক আলমগীর বলেন, ‘ঘাটে দিনের পর দিন আটকে থেকে আমাদের যে ভোগান্তি হতো তা থেকে রক্ষা পেয়েছি প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণে। তাইতো আজ প্রথম দিনে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা যাচ্ছি। খুব ভালো লাগছে। টোল পরিশোধের রসিদটি আমি সংরক্ষণ করে রাখব স্মৃতি হিসেবে। ‘
সাতক্ষীরা থেকে আসা বাসযাত্রী মো. আশরাফ হোসেন বলেন, ‘আগে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকা যেতে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা খরচ হতো। আর সময়ও লাগত সাত-আট ঘণ্টা। আর আজ সেতু চালু হওয়ায় ও এক্সপ্রেস হাইওয়ের কারণে প্রথম দিনে সেতুর টোল প্লাজা পর্যন্ত আসলাম তিন ঘণ্টায়। ঢাকা পৌঁছতে আর মাত্র ৪০ মিনিট লাগবে। বাসে ভাড়াও নিয়েছে মাত্র ৩০০ টাকা। তাই প্রধানমন্ত্রীকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ‘
মোটরসাইকেল আরোহী ইব্রাহিম বলেন, ‘বরিশাল থেকে ঢাকা যাচ্ছি জরুরি কাজে। আশা করি আজই আবার বরিশাল ফিরে বাড়িতেই দুপুরের ভাত খাব। আমাদের এই দীর্ঘদিনের স্বপ্নই আজ বাস্তবায়ন হয়েছে। এ জন্য সরকারের প্রতি আমরা চিরকৃতজ্ঞ। ‘
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আবুল হোসেন বলেন, আজ সকাল ৬টা থেকেই যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। প্রথম দিন হওয়ায় যানবাহনের চাপ একটু বেশি মনে হচ্ছে। টোল প্লাজায়ও একটু সময় বেশি লাগছে। দু-এক দিনে সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।
আরো পড়ুন : পাসপোর্টধারীরা বেনাপোল থেকে স্বপ্নের পদ্মা সেতু দেখতে দেখতে ঢাকা ফিরছেন