কুড়ি বছর পর বিশ্ব ক্রিকেটকে দেখিয়ে দিল- ‘টাইগাররা সব পারে

আন্তর্জাতিক খেলাধুলা প্রচ্ছদ মুক্তমত সফলতার গল্প হ্যালোআড্ডা

জন্মদিনের কেকটা ড্রেসিংরুমে কাটা হয়েছিল নাকি হোটেলে ফিরে, জানা হয়নি। (১৯৮৭ – সাকিব আল-হাসান, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অল-রাউন্ডার।) তবে ৩৫তম জন্মদিনে সতীর্থদের কাছ থেকে বোধ হয় সেরা সারপ্রাইজ গিফটটা পেলেন সাকিব আল হাসান। দলের সবাই মিলে গোটা সিরিজ জয়ের মুকুটই যেন তুলে দিলেন তার কাছে। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে গিয়ে তাদেরই চোখে চোখ রেখে, সেঞ্চুরিয়নকে রীতিমতো মিরপুর বানিয়ে শৌর্য-বীর্যের প্রদর্শন করছেন টাইগাররা। গ্যালারিতে লাল-সবুজের পতাকা হাতে আসা দর্শককে যে আনন্দের মুহূর্ত এনে দিয়েছেন তাসকিনরা- তা এককথায় সত্যিই অবিশ্বাস্য। এতটা প্রাপ্তির আশা বোধ হয় কেউই করেননি। কুড়ি বছর ধরে ম্যান্ডেলার দেশে ক্রিকেট খেলতে গিয়ে বারবার পরাজয় আর গ্লানিই শুধু সঙ্গ ছিল যাদের, সেই তারাই এবার হারের বৃত্ত ভেঙে বিশ্ব ক্রিকেটকে দেখিয়ে দিল- ‘টাইগাররা সব পারে।’

ক্রিকেট খেলতে শেখার পর এই আফ্রিকা থেকেই প্রথম বিদেশ সফরের জয় এসেছিল। ২০০৬ সালের আগস্টে নাইরোবিতে কেনিয়াকে হারিয়ে প্রথম হোয়াইটওয়াশের আনন্দ করেছিল বাংলাদেশ। আফ্রিকারই আরেক দেশ জিম্বাবুয়ের মাটিতে সিরিজ জয় এসেছিল তারও এক বছর পর। আফ্রিকা মহাদেশ জয় করতে বাকি ছিল শুধুই দক্ষিণ আফ্রিকা। সেটাও পূরণ হলো এবার। আফ্রিকা গিয়ে বিজয়ের গল্পগাথা লেখার স্বপ্নটা লালিত ছিল অনেক বছর ধরে। তবে প্রতিপক্ষের শক্তি-মত্তা আর কন্ডিশন- সব মিলিয়ে জয়ের সেই মনের কথা মুখে বলার মতো সাহস দলের কেউই বলতে পারেনি। অধিনায়ক তামিম ইকবালও দেশ থেকে খেলতে যাওয়ার আগে ‘সিরিজ জিতবই’ ঘোষণাটি দিয়ে যেতে পারেননি। তা ছাড়া এই সফরে নিয়ে সাকিবের যাওয়া-না যাওয়া নিয়েও অনেক কাণ্ড হয়েছিল। সব মিলিয়ে একটা বিক্ষিপ্ত ব্যাপার ছিল সবকিছুতে। হয়তো সেই সবই পুরো সিরিজে টাইগারদের তাতিয়ে দিয়েছে। সেইসঙ্গে ডোনাল্ড-মরকেলদের আগমনে এই সিরিজে টাইগারদের প্রোটিয়া কৌশলও কাজে লেগেছে। সে কারণেই হয়তো তাসকিনকে আগুন হতে দেখেছে প্রোটিয়ারা। শুনেছে তার হুঙ্কার। মাঠে যে ছেলে রীতিমতো আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে, ম্যাচ ও সিরিজসেরা হয়ে পুরস্কার মঞ্চে এসে সেই ছেলের মুখেই শিশুর হাসি, ‘আমি খুশি এবং গর্বিত।’ তাসকিন- আপনি এবং আপনার পুরো দলের জন্য প্রত্যেকেই গর্বিত।

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *