গাজীপুরের কালিয়াকৈরে মাহমুদ জিন্স ও মাহমুদ ডেনিম লিমিটেডের মালিককে মারধরের ঘটনায় প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট অ্যাক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ) সভাপতি মো. শাহরিয়ার। এ সময় ওই কারখানার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মোহাম্মদ রাফি মাহমুদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন তিনি।
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন সংগঠনটি। এতে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির দাবি ও দেশের রপ্তানির প্রধান খাত পোশাক শিল্পকে সুরক্ষার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করেন বিজিএপিএমইএ সভাপতি মো. শাহরিয়ার।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা এলাকায় ওই কারখানার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মোহাম্মদ রাফি মাহমুদকে পিটিয়ে আহত করা হয়।
জানা গেছে, ওই দিন সকাল ৯টার দিকে মাহমুদ জিন্স ও ডেনিম লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগদান না করে বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা চন্দ্রা ফ্লাইওভারের সংযোগে সড়কের উভয় পাশে অবরোধ সৃষ্টি করেন। এতে ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে তীব্র যানজট তৈরি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়।
বিকাল ৪টার দিকে মালিকপক্ষ কারখানাটির সামনে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে বকেয়া বেতনের বিষয়ে কথা বলতে যান। এ সময় শ্রমিকরা মালিকপক্ষের লোকজন ও শিল্প পুলিশের সদস্যদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে যৌথবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে পিছু হটে। পরে শ্রমিকরা কারখানাটির মালিকপক্ষের লোকজনকে কারখানার ভেতরে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
এ অবস্থার মধ্যে ওই কারখানার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাফি শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাকে বেধড়ক মারধর করে গুরুতর আহত করা হয়। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানা গেছে।
আহত রাফি মাহমুদ বলেন, বৃহস্পতিবার তাকে হত্যার চেষ্টা করেছিল, আমি দুই মিনিটের জন্যও কথা বলতে পারিনি, চারিদিক থেকে জনতা আক্রমণ শুরু করে। পরে টেনে টেনে ফ্লাইওভারের নিচে ফেলে দেওয়া হয় এবং বড় ইট, ধাতব রড ও গাছের ডাল দিয়ে মারধর করা হয়। তার মাথার পেছনে আঘাত করা হলে তিনি কিছুক্ষণের জন্য অজ্ঞান হয়ে যান। জ্ঞান ফিরে দেখেন তাকে হাত-পা ও ঘাড় চেপে ধরে টেনে কারখানার ভেতরে নিয়ে গেটে তালা দিয়ে রাখা হয়েছে।
শ্রমিকরা জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ, শ্রমিক, বিজিএমইএ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠক করে নভেম্বরের ২৮ তারিখে বেতন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও কারখানা থেকে কোনো মেসেজ না পাওয়ায় তারা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন।
কালিয়াকৈর থানার ওসি রিয়াদ মাহমুদ জানান, উত্তেজিত শ্রমিকরাই ওই কারখানার মালিক মোহাম্মদ রাফি মাহমুদকে মারধর করেছেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ মামলা জমা দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরো পড়ুন : নির্বাচন যদি আদায় করতে না পারি, তাহলে আন্দোলনের বিজয় ধূলিসাৎ হবে।