জেনে নিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কতটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন এরদোগান!

আন্তর্জাতিক নির্বাচন প্রচ্ছদ মুক্তমত হ্যালোআড্ডা

বালক বয়সে রাস্তায় লেবুর শরবত আর রুটি বিক্রি করতেন, পরে তিনিই হয়ে উঠলেন আধুনিক তুরস্কের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনীতিক এবং এক আঞ্চলিক নেতা।

তার উত্থান শুরু হয় প্রায় তিন দশক আগে ইস্তানবুল শহরের মেয়র নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে। খবর বিবিসির।

এর পরে তিনি তিন-তিনবার প্রধানমন্ত্রী এবং দুই দফায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। তার এই ক্ষমতা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও লড়বেন তিনি।

তুরস্ক যখন বিধ্বংসী ভয়াবহ ভূমিকম্প-পরবর্তী বিপর্যয় মোকাবিলার চেষ্টা করছে, তখনই প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানকে এই কঠিন রাজনৈতিক পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের এই ভূমিকম্পে তুরস্কে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। গৃহহীন হয়েছেন ১৫ লাখের মতো মানুষ। এই দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যর্থতার অভিযোগ উঠেছে প্রেসিডেন্ট এরদোগানের বিরুদ্ধে।

এ ছাড়া রয়েছে তুরস্কের টালমাটাল অর্থনৈতিক পরিস্থিতি। দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি এমন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে যে জীবনযাত্রার খরচ মেটাতে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ২০১৬ সালে সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থান চেষ্টা থেকে প্রেসিডেন্ট এরদোগান বেঁচে গেলেও, আসন্ন নির্বাচনে তিনি কতটা সফল হবেন সেটি নির্ভর করছে তার সরকার কীভাবে বিপর্যস্ত অর্থনীতি ও ভূমিকম্পপরবর্তী পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে তার ওপর।

শাসনামলের শুরুর দিকে রাস্তাঘাট ও হাসপাতালের মতো অবকাঠামো নির্মাণ করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন এরদোগান।

মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ও সাবেক ফুটবলার এরদোগান ১৯৯৪ সালে ইস্তানবুল শহরের মেয়র নির্বাচিত হয়ে চলে আসেন রাজনীতির সম্মুখ সারিতে।

২০০৩ সালে তিনি প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এর পর তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর ২০১৪ সালে তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। গত ২০ বছর ধরে তিনি দেশটির ক্ষমতায় আসীন।

ইসলামপন্থি মূল্যবোধের পক্ষে সরাসরি বক্তব্য দেওয়ার জন্য এরদোগান তার সমর্থকদের কাছে তুমুল জনপ্রিয়।

দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর তুরস্কের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে বদলে দিয়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করেন এরদোগান। আধুনিক তুরস্কের জনক মোস্তফা কামাল আতাতুর্কের পর অন্য যে কোনো নেতার চেয়ে তিনিই দেশটিকে সবচেয়ে বেশি বদলে দিয়েছেন।

এরদোগানের স্ত্রী মাথায় হিজাব পরে মাঝে মধ্যে তার স্বামীর সঙ্গে প্রকাশ্যে আসেন। মুসলিম মূল্যবোধের পক্ষে সরাসরি বক্তব্য দেওয়ার কারণেও এরদোগান বহু তুর্কির কাছে জনপ্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বে পরিণত হন।

তার নেতৃত্বে ইসলামপন্থি দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি বা একেপি ক্ষমতায় আসার পর সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগণকে তুষ্ট করার জন্য নানা ধরনের পদক্ষেপ নিতে শুরু করে।

চার সন্তানের জনক এরদোগান জন্মনিয়ন্ত্রণের সমালোচনা করেন। খ্রিস্টান ও মুসলিমদের উপাসনালয় হায়া সোফিয়াকে মসজিদে রূপান্তরিত করেন।

ক্ষমতায় আসার আগেও এক সমাবেশে জাতীয়তাবাদী একটি কবিতা পড়ার জন্য তার চার মাসের জেল হয়েছিল। এই কবিতার কয়েকটি লাইন ছিল এ রকম— মসজিদ আমাদের ব্যারাক, গম্বুজ আমাদের হেলমেট, মিনারগুলো আমাদের বেয়নেট এবং বিশ্বাস হলো আমাদের সৈন্য।

আরো পড়ুন : এবার আরব আমিরাত অস্ত্র কেনা স্থগিত করল ইসরাইল থেকে

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *