বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে এলেম আল ফায়দি নামে এক যুবককে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলামের আদালতে এ মামলা দায়ের করা হয়। মামলার বাদী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সামসুল আরেফিন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগটি সূত্রাপুর থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন।
বাদী সামসুল আরেফিন নিজেই গণমাধ্যমকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন— সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন, সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ, অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার, ওয়ারীর ডিসি ইকবাল হোসেন, ঢাকা-৬ আসনের সাবেক এমপি আবু সাইদ খোকন, ঢাকা-৭ এর সাবেক এমপি সোলাইমান সেলিম, ৩৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুর রহমান মিয়াজী, ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রঞ্জন বিশ্বাস, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরিফ হোসেন ছোটন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজী, সাধারণ সম্পাদক এসএম আকতার হোসাইন, কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি বেলায়েত হোসেন সাগর, সাধারণ সম্পাদক ফারুক হাওলাদার, সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রাহাত মোড়ল, সাধারণ সম্পাদক আশিকুল ইসলাম আশিক।
আসামির তালিকায় আরও আছেন- জবি ছাত্রলীগের নেতা, নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মিরাজ হোসেন রাজ, গণিত বিভাগের ১৩ ব্যাচের জাহিদুল ইসলাম হাসান, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন বিভাগের ১৫ ব্যাচের মাকসুদুল হাসান আরাফাত, বাংলা বিভাগের ১৬ ব্যাচের ফারহান লাবিব অপূর্ব, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ১৫ ব্যাচের সাজবুল হাসান, জবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইব্রাহীম সানিম, অর্থনীতি বিভাগ ছাত্রলীগের নেতা মীর মুকিত, বাংলা বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অর্জুন বিশ্বাস, গণিত বিভাগের ১৩ ব্যাচের মাহিমুর রহমান বিজয়, ছাত্রলীগ নেতা পরিসংখ্যান বিভাগের ১১ ব্যাচের শিক্ষার্থী মিনুন মাহফুজ, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ১১ ব্যাচের শাহরুখ আলম শোভন, তারিকুল ইসলাম নয়ন, আনোয়ারা বেগম রেশমা, কোতোয়ালি থানার যুবলীগ নেতা মোয়াজ্জেম ও মো. জুয়েল।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গত ১৯ জুলাই লক্ষ্মীবাজার এলাকায় জুমার নামাজ আদায়ের পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি কবি নজরুল কলেজ, সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও সিটি করপোরেশন মহিলা কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরাসহ আপামর জনগণ বৈষম্যবিরোধী মিছিল করেন। আসামিরা গণভবনে বসে তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রতিহত করার নির্দেশ দেন। আসামিরাসহ আরও ৫০–৬০ জন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ এবং পুলিশ বাহিনীর মাঠ স্তরের ৬০–৭০ জন সশস্ত্র সদস্য একযোগে শান্তিপ্রিয় নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করেন। তাদের গুলিতে বেলা ২টা ৫০ মিনিটের দিকে এলেম আল ফায়দি নামে এক যুবক সরকারি কবি নজরুল কলেজের সামনে গুলিবিদ্ধ হন। গুলি লেগে তার মাথার মগজ বের হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
আরো পড়ুন : গণমাধ্যম নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করায় প্রকাশ্যে সাংবাদিকদের কাছে ক্ষমা চাইলেন দুলু