সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় র‌্যাব সদর দপ্তরের তদন্ত শুরু, ১১ সদস্যকে তলব

অনুসন্ধানী নারী নারী নির্যাতন প্রচ্ছদ হ্যালোআড্ডা

নওগাঁয় র‌্যাব হেফাজতে সরকারি কর্মচারী সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় তাকে আটককারী র‌্যাবের জয়পুরহাট ক্রাইম প্রিভেশন কোম্পানির প্রধান মেজর মোস্তফা জামান ও সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ রানাসহ ১১ র‌্যাব সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে তদন্ত কমিটি। ঢাকার র‌্যাব সদর দপ্তরের অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির (আইইসি) তিন সদস্য রাজশাহীতে র‌্যাব-৫ কার্যালয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে। এ জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার জয়পুরহাট সিপিসি-২ কার্যালয়ের ঐ ১১ সদস্যকে রাজশাহীতে ডেকে আনা হয়েছে।

এর আগে গতকাল র‌্যাবের একজন মেজরের নেতৃত্বে আইইসির তিন সদস্যের কমিটি ঘটনা তদন্ত করতে নওগাঁয় যায়। তদন্ত কমিটি ঘটনার দিন জেসমিনকে আটকের স্থান মুক্তির মোড় পরিদর্শন করে। সেখানে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য শোনে। মুক্তির মোড়ে র‌্যাবের অভিযান চালানোর সময় ঘটনাস্থলে যুগ্মসচিব এনামুল হক ছিলেন কিনা-এ বিষয়টিও প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছে জানতে চায় তদন্ত কমিটি। মুক্তির মোড় থেকে জেসমিনকে আটক করে র‌্যাবের গাড়িতে তোলা হয়। এরপর একটি কম্পিউটারের দোকানের সামনে র‌্যাবের ওই গাড়ি থামে। র‌্যাব সদস্যরা ওই দোকানে জেসমিনকে নিয়ে প্রবেশ করেন। কিছু সময় পর ওই দোকান থেকে বের হওয়ার পর জেসমিন পড়ে যান। এরপর র‌্যাব সদস্যরা তাকে ধরাধরি করে গাড়িতে করে নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের নিয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের এমন বক্তব্য তদন্ত কমিটি শোনার পর তারা নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে যায়। সেখানে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা প্রদানকারী চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে। এছাড়া এসব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার সময় বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য লিপিবদ্ধ করে। এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটির প্রধান সাংবাদিকদের বলেন, সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে ঘটনার প্রতিবেদন র‌্যাব সদর দপ্তরে জমা দেওয়া হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, র‌্যাবের তদন্ত কমিটি রাজশাহীতে যুগ্মসচিব এনামুল হক ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. কফিল উদ্দিনের বক্তব্য গ্রহণ করবে। এছাড়া প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার মামলার প্রধান আসামি আল আমিনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবে।

সূত্র আরও জানায়, র‌্যাবের হাতে সুলতানা জেসমিন আটক হন ২২ মার্চ। আটকের পরদিন ২৩ মার্চ বিকালে জেসমিনকে দুই নম্বর আসামি করে রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন যুগ্ম-সচিব এনামুল হক। র‌্যাবের তদন্ত কমিটি রাজপাড়া থানার ওসির সঙ্গেও কথা বলবে।

এ ব্যাপারে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ঢাকা থেকে র‌্যাবের ইন্টারন্যাল ইনকোয়ারি কমিটির সদস্যরা রাজশাহীতে গেছেন। রাজশাহী র‌্যাব-৫ কার্যালয়ে ঘটনার দিন অভিযান পরিচালনাকারী টিমের সদস্যদের ডেকে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত কমিটি অভিযান পরিচালনাকারী জয়পুরহাট সিপিসি-২ এর ১১ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। এই তদন্ত কমিটি র‌্যাব সদর দপ্তরে রিপোর্ট জমা দিবে। রিপোর্ট অনুযায়ী কেউ যদি জড়িত থাকে, সে বিষয়ে র‌্যাব আইনগত ব্যবস্থা নিবে।

উল্লেখ্য, গত ২২ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নওগাঁ শহরের মুক্তি মোড় এলাকা থেকে সুলতানা জেসমিনকে আটক করে র‌্যাব। তাদের হেফাজতে থাকা অবস্থায় ২৪ মার্চ সকালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। সুলতানা জেসমিন নওগাঁ সদর উপজেলার চন্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ে অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

আরো পড়ুন : হাতীবান্ধায় স্বামীর সহায়তায় স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *