ভেজাল ওষুধে মৃত্যুতে ১০৪ শিশুর পরিবারকে ১৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ

অর্থনীতি আইন-আদালত ক্রাইম নিউজ প্রচ্ছদ শিশু অধিকার শিশু/কিশোর স্বাস্থ্য কথা হ্যালোআড্ডা

৩২ বছর আগে ভেজাল প্যারাসিটামল সেবনে ১০৪ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় প্রত্যেক পরিবারকে ১৫ লাখ টাকা করে মোট ১৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিল সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ এ রায় প্রকাশ করেছেন। রায়ে একটি স্বাধীন জাতীয় ভেজাল ওষুধ প্রতিরোধ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রায়ে আটটি নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। এগুলো হলো-

১. প্রত্যেক ব্যক্তির বিনামূল্যে সব ধরনের চিকিৎসা সুবিধা পাওয়া তার সংবিধান প্রদত্ত মৌলিক অধিকার। এ অধিকার তার বেঁচে থাকার অধিকারের অন্তর্ভুক্ত ঘোষণা।

২. ওষুধে ভেজাল মিশ্রণ বন্ধে প্রয়েজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (সি) মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রতিপক্ষদের নির্দেশ প্রদান।

৩. ১৯৯১ সালে ৭৬ জন এবং ২০০৯ সালে ২৮ জন শিশুর মৃত্যুতে ওষুধ প্রশাসন কর্তৃপক্ষের ‘কঠিন দায়’।

৪. ১৯৯১ সালের ৭৬ জন এবং ২০০৯ সালের ২৮ জন শিশুর প্রত্যেক পরিবারকে ১৫ লাখ টাকা হারে ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য ওষুধ প্রশাসন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ। ওই ক্ষতিপূরণের টাকা ওষুধ প্রশাসন কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট দায়ী ব্যক্তি ও ওষুধ কোম্পানি থেকে আদায় করতে পারবেন। ১০৪ শিশুর পরিবারকে ১৫ লাখ টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ।

৫. নকল ও ভেজাল ওষুধের প্রভাব ও প্রতিকারে একটি স্বাধীন জাতীয় ভেজাল ওষুধ প্রতিরোধ কমিটি গঠনের নির্দেশ।

৬. দরখাস্তকারী কর্তৃক ২০২২ সালের ২ জুন দাখিল করা সম্পূরক হলফনামায় বর্ণিত পরামর্শগুলো বিবেচনার জন্য প্রতিপক্ষদের নির্দেশ প্রদান।

৭. ২০১৭ সালের ২৩ মার্চ বাংলাদেশ গেজেটে অতিরিক্ত প্রকাশিত জাতীয় ওষুধ নীতি-২০১৬ দ্রুত বাস্তবায়নের পরামর্শ প্রদান।

৮. যুক্তরাজ্যের আদলে বাংলাদেশের জনগণের চিকিৎসা সেবা অবকাঠামো তৈরির পরামর্শ।

এই রায়ের অনুলিপি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে পাঠানোর জন্য রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে ২০২২ সালের ২ জুন ভেজাল প্যারাসিটামল সেবনে ১০৪ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় পরিবার প্রতি ১৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়ে রায় দেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট।

ওই সময় রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেছিলেন, ১৯৯১ সালে ভেজাল প্যারাসিটামল সিরাপ সেবন করে ৭৬ শিশু এবং ২০০৯ সালে রিড ফার্মার প্যারাসিটামল সেবন করে ২৮ শিশু মৃত্যুবরণ করে।

এ ঘটনায় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে ২০১০ সালে পরিবেশ ও মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে জনস্বার্থে প্রতিকার চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করা হয়। একই বছর শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ওষুধ প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও ক্ষতিপূরণের প্রশ্নে রুল দেওয়া হয়।

আরো পড়ুন : রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও পিকেটিং করছে স্বেচ্ছাসেবক দল

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *