মোমবাতি, টর্চের আলোয় চলছে শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসা

জনদুর্ভোগ প্রচ্ছদ স্বাস্থ্য কথা

দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ চিকিৎসাকেন্দ্র বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের পাঁচটি ইউনিট বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। এতে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম।

জানা গেছে, তিন দিন ধরে এমন পরিস্থিতি বিরাজ করছে চারটি ওয়ার্ডে। আর রেডিওলজি বিভাগে এমন অবস্থা বিরাজ করছে ১৮ দিন যাবত। আরও কয়েকটি ওয়ার্ডে এ অবস্থা তৈরি হলেও প্রাথমিকভাবে তা মেরামত করা হয়েছে।

১৯৬৮ সালে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পর বিদ্যুৎ সংযোগ মেরামত না করায় এমন অবস্থা বলে মনে করছেন অনেকে। বর্তমানে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে জি ব্লকের পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ড ৩ ও ৪। আই ব্লকের চক্ষু (পুরুষ), এ ব্লকের পুরুষ সার্জারি ১ এবং রেডিওলজি বিভাগ।

এক রোগীর স্বজন নাইমুল ইসলাম বলেন, ‘ওয়ার্ডে আলো না থাকায় আমরা অন্ধকারে টয়লেটে পর্যন্ত যেতে পারছি না। চরম অসুবিধার মধ্যে রয়েছি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’

আরেক রোগীর স্বজন আরাফাত হোসেন শাওন বলেন, ‘হাসপাতালে ঠিকমতো চিকিৎসা পাই না। তারপরও আসতে হয়। কারণ আমাদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। এখন এখানে বিদ্যুৎ পর্যন্ত নেই। এভাবে মনিটরিং ছাড়া হাসপাতাল চলতে পারে না।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নার্স বলেন, ‘বিদ্যুৎ না থাকায় রাতে আমরা ঠিকভাবে ইনজেকশন দিতে পারছি না। চলাফেরা করতে পারছি না। মোম আর চার্জার লাইট ব্যবহার করে সেবা দিতে হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘হাসপাতালের সামনে কোটি টাকা ব্যয় করে গেট নির্মাণ করা হচ্ছে। এটা হচ্ছে শুধু শুধু অপচয়। হাসপাতালে সেবা দেওয়া যায় না। এখন বিদ্যুৎ নেই। টয়লেট ব্যবহারের অনুপযোগী। আমি মনে করি, গেটের চেয়ে রোগীর সেবা আমরা কীভাবে দিতে পারব, সেই উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।’

দায়িত্বরত এক চিকিৎসক বলেন, ‘গত বুধবার থেকে মারাত্মক অসুবিধার মধ্যে রয়েছি। এভাবে একটি হাসপাতাল চলতে পারে না। হাসপাতালের পুরো সিস্টেমটাই এলোমেলো। আমরা টর্চ দিয়ে রোগী দেখি। তাহলে বুঝুন আমাদের পরিস্থিতি!’

হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মনিরুজ্জামান শাহিন বলেন, বর্তমানে সার্জারি ওয়ার্ডগুলোতে বিদ্যুৎ নেই। আর ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের পর থেকে এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রেডিওলজি বিভাগ। এতে করে সরকারিভাবে পরীক্ষা করানো যাচ্ছে না। চিকিৎসকরা সঠিকভাবে চিকিৎসা দিতে পারছেন না। নার্সরাও সেবা দিতে পারছেন না। রোগীরা বেকায়দায় রয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আমার মনে হয় হাসপাতালটি ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ লাইন মেরামত করা হয়নি। এজন্য বিভিন্ন স্থান থেকে বিদ্যুৎতের ক্যাবল নষ্ট হয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে।’

আরো পড়ুন : পরিবহন ধর্মঘট থাকলেও আ.লীগের ঘাঁটি ফরিদপুরে আজ বিএনপির শক্তি প্রদর্শনের দিন

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *