সিলেট ব্যুরো : হঠাৎ করেই লন্ডনে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। ক’মাস ধরে যাচ্ছেন যাচ্ছেন করছিলেন। মাঝখানে অসুস্থতা। গত রোববার আরিফ গেলেন লন্ডনে। ওদিকে- সোমবারই নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দিলো; নির্বাচনের তারিখ। ২১শে জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন। আগে থেকেই এই সময়ে নির্বাচনের আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের কেউ কেউ এটি বলেছিলেন। গতকাল তা নিশ্চিত হলো। ফলে আর কোনো রহস্য থাকলো না সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে।
মাঝখানে অবশ্য প্রশাসক বসানোরও গুঞ্জন উঠেছিল। সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে তোড়জোড়ের অন্ত নেই। জানুয়ারির শেষদিকে লন্ডন থেকে এসে নির্বাচনের মাত্রাকে বাড়িয়ে দেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তিনি এসে মাঠে নামায় গত দু’মাস ধরে মাঠে চাঙা আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে আরও ৭ প্রার্থী মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। আওয়ামী লীগের ভেতরে যখন মনোনয়ন নিয়ে তুমুল যুদ্ধ তখন বিএনপি কিংবা বিরোধী জোটের অভ্যন্তরে নীরবতা চলছে। কোনো তোড়জোড় নেই বিএনপিতে। এবার আগেভাগে এসে কেউ প্রার্থিতা ঘোষণা করছেন না। কিংবা নির্বাচন করবেন কিনা সেটিও বলছেন না। ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারা সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে মুখ খুলছেন না। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীও। লন্ডন যাওয়ার আগে শনিবার সিলেট সিটি করপোরেশনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ঘুরেফিরে আসে মেয়র প্রার্থিতার বিষয়টি। তবে- আরিফুল হক চৌধুরী খোলাসা করে কিছু বলেননি। সময়ের অপেক্ষায় থাকতে বললেন তিনি। নির্বাচন নিয়ে নিজের দল বিএনপি এবং আরিফ দু’পক্ষের মধ্যে রহস্যময় কুলুপ। এই অবস্থায় ভোটারদেরও অপেক্ষা। আরিফের সিদ্বান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন অন্যদলের প্রার্থীরাও। ফলে সব রহস্যকে দেশে রেখেই লন্ডনে পাড়ি জমালেন তিনি। তবে, থাকছেন না বেশিদিন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই সিলেট ফিরে আসবেন। লন্ডন সফর নিয়েও চলছে কানাঘুষা। মেয়র নির্বাচনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আরিফ লন্ডন গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিএনপি’র নেতাকর্মীরাও। তারা জানিয়েছেন, এই সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। এ কথায় দল অনঢ়। এখন আরিফের বেলায় দলের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না-ও হতে পারে। সার্বিক বিষয়টি নিয়ে মেয়র আরিফ লন্ডনে অবস্থানরত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন। দলের মতামতের বিষয়টি তিনি অবগত করবেন। এরপর ফিরে এসে সিদ্ধান্ত দেবেন। আরিফের ঘনিষ্ঠজনের দাবি হচ্ছে- বিএনপি আনুষ্ঠানিক নির্বাচনে না গেলে আরিফুল হক চৌধুরীর জন্য এ নির্বাচন হবে অগ্নিপরীক্ষা। কারণ- মার্কা ছাড়া, আনুষ্ঠানিক সমর্থন ছাড়া বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবে। বিগত দুটি নির্বাচনে আরিফের বেলায় এমনটি ঘটেনি। এর মধ্যে ২০১৩ সালে আরিফ প্রকাশ্য বিএনপি’র সমর্থন এবং ২০১৮ সালে দলীয় প্রতীকেই তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। এ কারণে দু’বার তার সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীরা একাট্টা ছিলেন। আরিফের জয়ে ঐক্যবদ্ধ ছিলেন নেতাকর্মীরাও। এবার আওয়ামী লীগের অধীনে সিটি নির্বাচনে বিএনপি না এলে আরিফুল হক চৌধুরী কী কববেন- সেটাই বড় প্রশ্ন। ঘনিষ্ঠ নেতারা জানান- সব রহস্য খোলাসা করতেই আরিফুল হক চৌধুরী লন্ডনে আছেন। দলের শীর্ষ নেতার সঙ্গে কথা বলে আসবেন। তার সিদ্ধান্ত নিয়ে এসে প্রয়োজন হলে নির্বাচন করবেন। নতুবা তিনি বিরত থাকতে পারেন।
আরো পড়ুন : শাহিন-তৌহিদুল বাহিনীর ভয়ে গ্রাম ছাড়া সবাই; মাটির ক্লাব ঘর আদালতে খুন করা হয় আমিনুরকে