ফিলিস্তিনিদের অন্য দেশে চলে যাওয়া এবং গাজায় ইসরায়েলি নতুন বসতি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে দুই ইসরায়েলি মন্ত্রীর বক্তব্যকে উসকানিমূলক ও দায়িত্বজ্ঞানহীন বলে অভিহিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার মঙ্গলবার ওই দুই মন্ত্রীর বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, গাজা ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড। তা ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড হিসেবেই থাকবে। তবে হামাস ভবিষ্যতে কখনও গাজার নিয়ন্ত্রণ নিতে পারবে না। কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসরায়েলকে হুমকি দিতে পারবে না।
এর আগে ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোতরিচ ও জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গ্যভি বলেছিলেন, গাজা থেকে অন্য দেশে চলে যাওয়ার জন্য ফিলিস্তিনিদের উদ্বুদ্ধ করা উচিত। গাজায় ইহুদি বসতি স্থাপনকারীদের পাঠানো উচিত। বেন গ্যভির সোমবার বলেন, গাজার বাসিন্দাদের অন্যত্র স্থানান্তরিত হতে উদ্বুদ্ধ করাই সংঘাত নিরসনের সমাধান।
এ প্রসঙ্গে ম্যাথিউ মিলার বলেন, ইসরায়েলের দুই মন্ত্রী গাজার বাইরে ফিলিস্তিনিদের জন্য নতুন বসতি গড়ে তোলার যে আহ্বান জানিয়েছেন, তা প্রত্যাখ্যান করছে ওয়াশিংটন।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এ পদক্ষেপকে বসতি স্থাপনকারীদের প্রতি ইসরায়েল সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের হতাশার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ইসরায়েলের ডানপন্থি মন্ত্রী ইতামার বেন-গাভির ও বেজালেল স্মতরিচ উভয়েই এর আগে পশ্চিম তীরের সহিংসতাকে আড়াল করার চেষ্টার দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। এ দুই মন্ত্রী নিজেরাও সেটলার। গত কয়েক সপ্তাহে পশ্চিম তীরে বসবাসরত ফিলিস্তিনিরা বিবিসিকে জানান, ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা আরও ভূমি দখলের জন্য গাজার যুদ্ধকে ব্যবহার করছে।
১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের সময় পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীর দখলে নেওয়ার পর থেকে অন্তত আড়াইশ সেটেলমেন্ট বা বসতি নির্মাণ করেছে ইসরায়েল, যেখানে ৭ লাখেরও বেশি ইহুদি বসবাস করে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বড় অংশই এভাবে বসতি নির্মাণকে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় অবৈধ মনে করে। যদিও ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাখ্যাকে গ্রহণ করে না।
জাতিসংঘ বলছে, গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর ৩১৪টি হামলার ঘটনা তারা রেকর্ড করেছে। এতে ফিলিস্তিনি হতাহত হওয়া ছাড়াও ফিলিস্তিনি মালিকানাধীন সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে, একই সময়ে ফিলিস্তিনিদের হাতে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর তিন সদস্যসহ চারজন নিহত হয়েছে।
সম্প্রতি এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, ‘পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলার জন্য যেসব উগ্রপন্থি সেটলার দায়ী তাদের জবাবদিহির আওতায় আনার জন্য ইসরায়েল সরকারকে আমরা জোর দিয়ে বলছি।’
আরো পড়ুন : আজ ৩ জানুয়ারি : আজকের দিনে জন্ম-মৃত্যুসহ যত