তিন দিন পর ভাত খেতে পেরেছে চার দিন ধরে ট্রাকে বসবাস করা শাহজাহান

ওকে নিউজ স্পেশাল জনদুর্ভোগ প্রচ্ছদ মুক্তমত লাইফ স্টাইল হ্যালোআড্ডা

সিলেট প্রতিনিধি: ‘তিন দিন ধরে অর্ধাহারে ছিলাম। শুধু শুকনা খাবার খেয়ে থেকেছি। আজ সকালে একজন একটি গ্যাসের সিলিন্ডার দিয়েছেন। সেটি দিয়েই রান্না করে ভাত খেতে পেরেছি।’ সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ বঙ্গবন্ধু মহাসড়কের গৌরিনগর এলাকায় একটি ট্রাকের মধ্যে ভাত খেতে খেতে কথাগুলো বলছিলেন মো. শাহজাহান (৪০)। পাশে ছোট ভাই বেলাল আহমদও (৩০) ভাত খাচ্ছিলেন। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ রণিখাই ইউনিয়নে তাঁদের বাড়ি।

কথার ফাঁকে বেলাল আহমদ হাত দিয়ে দেখিয়ে বলেন, মহাসড়কের পূর্ব পাশে তাঁদের বাড়ি। তাঁদের ঘরের ভেতর বুকসমান পানি। গত বৃহস্পতিবার হাঁস-মুরগি নিয়ে ট্রাকে উঠেছেন তাঁরা। সঙ্গে শাহজাহানের মা, স্ত্রী ও এক মেয়ে। রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শাহজাহান ও বেলালের সঙ্গে প্রথম আলোর এই প্রতিবেদকের কথা হয়।

আগের বন্যায় ধান গেছে। এবারের বন্যায় গরু। সেই দুঃখ ভুলতেই হয়তো বন্যার পানিতে মাছ ধরছেন ফখরুল মিয়া। যদিও জানেন না এই মাছ রান্না হবে কোন চুলায়।

বেলাল আহমদ বলেন, ‘সড়কের পাশে ছিলাম বলে কেউ আমাদের খোঁজ নেয়নি। তিন দিন ধরে শুকনা খাবার খেয়ে থেকেছি। রান্না করার মতো চুলা কিংবা কাঠ ছিল না। বৃষ্টি ও বন্যার পানিতে জোগাড় করারও ব্যবস্থা ছিল না।’

ট্রাকটির ওপরে তেরপল টাঙিয়ে পানি রোধের ব্যবস্থা করা হয়। সঙ্গে বাঁশ বেঁধে কিছুটা উঁচু করা হয়েছে। রোববার সকালে বৃষ্টি না থাকায় চারটি হাঁস রাখা ছিল সড়কের পাশে। ট্রাকের ওপরে একটি মুরগি চাল ভেঙে খাচ্ছিল, খাঁচায় বন্দী একটি শালিক পাখি। ট্রাকের চালক ও সহকারীর আসনে বসে ভাত খাচ্ছিলেন শাহজাহান, তাঁর স্ত্রী ও ছোট ভাই বেলাল।

কাঁধে করে বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণসামগ্রী নিয়ে যাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবী শাহ সিকান্দর আহমদ। শনিবার বিকেলে সিলেট নগরের বাগবাড়ি এলাকায়

বানভাসি হয়ে পরিবারের পাশাপাশি গবাদিপশু নিয়ে বিশ্বনাথ সড়কের ইমদপুর এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন আব্দুর নূর

ভাত খেতে খেতে শাহজাহান বলেন, ঘরের মালামাল কিছুই আনেননি। কোনোরকমে ঘরের মধ্যে খাটের ওপর মালপত্র রেখে তালা মেরে বের হয়েছেন। এখনো বাড়িতে যাওয়া হয়নি তাঁর। মালপত্র ঘরের ভেতরেই আছে। এ জন্য এলাকা ছেড়ে যেতে পারছেন না।

আরো পড়ুন : বন্যা হলেই চোখে ভাসে মাকে কবর দেওয়ার সেই স্মৃতি

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *