ভাঙ্গা ঘরে কাপড়ের বেড়ায় সত্তরার্ধ বয়সী জবেদার মানবেতর জীবন-যাপন

ওকে নিউজ স্পেশাল জাতীয় নারী প্রচ্ছদ

ঝালকাঠি প্রতিনিধি: আর কত বয়স অইলে একটা সরকারি ঘর পামু বাবা, রাইতে শীতে অসুস্থ শরীল নিয়া ঘুমাইতে পারিনা বাবা, গত বছর টিএনও আফায় খাওন দিয়া গেছে আর মোর ঘরডাও দেইক্কা দেওয়ার কথা বলছেলে। ঘরের খুটি নষ্ট হয়ে গেছে যেকোন সময় ঘর ভেঙ্গে মাথার উপর পরতে পারে বলে সাংবাদিকের কাছে প্রশ্ন করলেন ঝালকাঠি জেলার সদর উপজেলাধীন উদচড়া গ্রামের মৃত নেছার উদ্দীনের স্ত্রী সত্তরার্ধ বয়সি বিধবা জবেদা খাতুন। মৃত্যুর আগে যেন একটু খেয়ে পড়ে ভালোভাবে বেঁচে থাকতে চান জবেদা খাতুন। তাই স্বামীর ভিটায় একটি বসত ঘর হয় পাওয়ার জন্য এভাবেই জানালেন।

মানুষের মৌলিক চাহিদার মধ্যে অন্যতম খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থানের মত অধিকাংশ চাহিদা থেকেই বঞ্চিত এই বিধবা বৃদ্ধা নারী। বর্তমানে তার বাড়িতে বাঁশের খুটি, হোগলের বেড়া সম্বলিত হলেও বেড়া নষ্ট হওয়ায় ঘরের খুটির সাথে নিজের পড়নের কাপড় বেধে বেড়া দিয়ে থাকছেন জবেদা খাতুন। এখানেই শেষ নয় অসংখ্য ছিদ্র থাকা টিনের ছাউনির নিচে বৃষ্টি এলেই পানিতে ঘর তলিয়ে যায়, প্রচন্ড শীতে অসুস্থ শরীর নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন জবেদা খাতুন। তার ঘরে খাদ্য সামগ্রী না থাকায় স্থানীয় এক সাংবাদিকের সহযোগীতায় কিছু খাদ্য সহায়তা করা হলেও তা অপ্রতুল। কখনও কখনও আসে পাশের মানুষের কাছে হাত পেতে সামন্য কিছু অর্থ সংগ্রহ করে দিন যাপন করে আসছেন।

গত বছর কঠোর লকডাউনে ঘরের বাহিরে বের হতে না পেরে খাদ্য সংকটে থাকা অবস্থায় স্থানীয় সাংবাদিক মো: ইমাম হোসেনের মাধ্যমে জবেদা খাতুনের অসহায় জীবন-যাপনের বিষয়টি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানো হলে, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবেকুন্নাহার খাদ্য সামগ্রী নিয়ে জবেদা খাতুনের বাড়ি উপস্থিত হয়ে তাকে খাদ্য সহায়তা করেন। একই সাথে জবেদা খাতুনের জড়াজীর্ন ভাঙ্গা ঘর পরির্দশন পূর্বক তাকে সরকারি ঘর এবং ব্যক্তিগত ভাবে নিজ খরচে জবেদা খাতুনের চোখের চিকিৎসা করাবেন বলে আশ্বাষ দেন। ঝালকাঠি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবেকুন্নাহার বৃদ্ধা জবেদা খাতুনকে চিকিৎসার করিয়েছিলেন।

এ বিষয় ঝালকাঠি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবেকুন্নাহারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, গত বছর করোনা মহামারির সময় তার বাড়ীতে গিয়ে আমি তাকে খাদ্য সামগ্রী পৌছ দিয়েছিলাম তখন তার বসত ঘরের অবস্থা খারাপ দেখতে পাই। তিনি আমার কাছে একটি ঘরের কথা বলেছিলেন, আমাদের জেলায় ঘর বরাদ্ধ না থাকায় আমরা দিতে পারিনি তবে চলতি বছরে বরাদ্ধ এলেই তাকে একটা ঘর করে দিতে পারবো।

ইমাম বিমান, ঝালকাঠি

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *