ভারতে এক দিনে ৪৫ শতাংশ ও পাকিস্তানে ২২ শতাংশ করোনা সংক্রমণ বাড়ছে

আন্তর্জাতিক জনদুর্ভোগ প্রচ্ছদ লাইফ স্টাইল স্বাস্থ্য কথা

ভারতে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ আবার বাড়ছে। এক দিনের ব্যবধানে দেশটিতে সংক্রমণ ৪৫ শতাংশ বেড়েছে বলে আজ সোমবার সকালে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। পাকিস্তানের করাচিতেও দৈনিক সংক্রমণের হার ২২ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। এই হার দেশটিতে সর্বোচ্চ। খবর এনডিটিভি ও ডনের

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, ভারতে আজ সকাল আটটা থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় ১৭ হাজার ৭৩ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আগের দিন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১১ হাজার ৭৩৯। এক দিনের ব্যবধানে রোগী শনাক্ত ৪৫ শতাংশ বেড়েছে। দৈনিক শনাক্তের হার ৫ দশমিক ৬২ শতাংশ।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় কোভিডে আরও ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সংখ্যা আগের দিনের চেয়ে চারজন কম। ভারতে শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা ৪ কোটি ৩৪ লাখ ৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৫ লাখ ২৫ হাজার ২০ জন।

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে সংক্রমণ খুব দ্রুত বাড়ছে। ১৭ জুনের পর দিল্লির কোভিড বিধিনিষেধ আরোপিত এলাকার (কনটেইনমেন্ট জোন) সংখ্যা ৭০ শতাংশ বেড়েছে। দিল্লির দাপ্তরিক তথ্য অনুযায়ী, ১৭ জুন কোভিড বিধিনিষেধ আরোপিত এলাকার সংখ্যা ছিল ১৯০। ২৪ জুন এই সংখ্যা ৭০ শতাংশ বেড়ে ৩২২টিতে গিয়ে ঠেকেছে।

পরিবার অথবা প্রতিবেশী গুচ্ছ অঞ্চলে অধিকাংশ রোগী শনাক্ত হচ্ছেন। কর্তৃপক্ষ জানায়, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এমনকি একটি অথবা দুটি বাড়ি ঘিরেই ক্ষুদ্র কোভিড বিধিনিষেধ আরোপিত এলাকা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সাধারণত, তিন বা ততধিক কোভিড রোগী শনাক্ত হলেই বিধিনিষেধ আরোপিত এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে দেওয়া হচ্ছে। তবে কোথাও কোথাও পরিস্থিতি বুঝে জেলা কর্তৃপক্ষ এই বিধিনিষেধ আরোপ করছে।

এদিকে পাকিস্তানের জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের বরাত দিয়ে ডন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ দেশটির করাচি শহরে করোনা শনাক্ত ২২ দশমিক ৬৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এই হার দেশটির মধ্যে সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শনাক্তের হার মুজাফ্‌ফরাবাদ শহরে—৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। তবে লক্ষণীয় বিষয়, পাকিস্তানের কোয়েটা, গিলগিট, সোয়াত ও মুলতানের মতো বেশ কিছু শহরে শনাক্তের হার শূন্য।

দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট আরও জানিয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ৪১২টি নমুনা শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৮২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ৪০৬। দৈনিক শনাক্তের হার ২ দশমিক ৮৫। মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১৫ লাখ ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আরও দুজনের মৃত্যুতে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩০ হাজার ৩৯০।

মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সিনহুয়া জানিয়েছে, গতকাল রোববার মধ্যরাত নাগাদ দেশটিতে ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে তিনজন দেশের বাইরে থেকে এসেছেন। দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৪৫ লাখ সাড়ে ৫৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আরও একজনের মৃত্যুতে প্রাণহানি দাঁড়িয়েছে ৩৫ হাজার ৭৪৬ জনে।

এএফপি জানিয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারির চতুর্থ ঢেউ আঘাত হেনেছে বলে ঘোষণা দিয়েছে পেরু সরকার। রোববার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ ঘোষণা দেয়। বিশ্বে কোভিডে উচ্চ মৃত্যুহারের দেশগুলোর একটি পেরু। আরপিপি রেডিওকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হোর্হে লোপেজ বলেন, ‘রোগী শনাক্তের যে বৃদ্ধি আমরা দেখছি, সে হিসাবে আমরা বর্তমানে চতুর্থ ঢেউয়ের মধ্যে আছি।’

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, চলতি মাসের শুরুতে প্রতি সপ্তাহে ১ হাজার ৮০০ জন করে রোগী শনাক্ত হতেন। সেটা বেড়ে শেষ সপ্তাহে ১১ হাজারে গিয়ে ঠেকেছে। অবশ্য রোগী শনাক্ত বাড়লেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় হাসপাতালে ভর্তি কিংবা মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।

পরিসংখ্যানবিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারসের সোমবারের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বব্যাপী প্রায় ২ লাখ ৯৫ হাজার রোগী শনাক্ত হয়েছেন। মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫৪ কোটি ৮৯ লাখ ৬৯ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। একই সময়ে আরও ৫৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনের উহানে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসে ৬৩ লাখ ৫০ হাজার ৮৫৭ জনের মৃত্যু হলো।

আরো পড়ুন : মান্দায় প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় সেই ক্লিনিকে প্রশাসনের হানা

Share The News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *